আলোচনা ১১৮
কবি তামান্না ফেরদৌস বরাবরই অল্প কথায় কিন্তু গভীরতা নিয়ে আমাদের কাছে তার কাব্য উপস্থাপন করেন। আমার খুব পছন্দের অল্প কথার এবং বক্তব্যের গভীরতা সম্পন্ন কবিতা। এবারের আলোচনার কাব্য ‘ ঈশ্বর, দয়া করো আমায়”। কবিতায় দুটো পক্ষ (দুটো প্রজন্ম স্পষ্ট) এবং দু প্রজন্মের সমাজ বাস্তবতা বিদ্যমান। বিস্তর ব্যবধান দু প্রজন্মের সময়ের প্রেক্ষাপট, জীবনাচরণ, টিকে থাকার লড়াই, একে অপরের মাঝে স্থানের দূরত্ব কিন্তু অনুভব, অনুভুতি, ভালবাসায় কোন বিবর্তন হয়নি এমনকি পরিবর্তনও হয়নি, তাই আক্ষেপ, দুপক্ষই বুঝতে পারেন বাস্তবতা, কারোই কিছু করার নেই, করার থাকে না। তাহলে সমাধান কার কাছে? মানুষের কাছে তো নেইই, ঈশ্বরের কাছে ? তাও নেই, তারপরও ঈশ্বর যদি অন্তত কষ্টটুকু লাঘব করে দেয়।
বৃদ্ধ পিতা-মাতার কাছে সন্তান থাকে না, রুঢ় বাস্তবতা অনেক সময়ই থাকতে দেয় না। কেউ কেউ হয়তো ইচ্ছে করে থাকে না, তারা কষ্টও পায় না, তাদের কথা ভিন্ন। কিন্তু কবিতার বক্তব্যে, যে সন্তান বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে নিয়েই আঁকড়ে থাকতে চান কিন্ত নানামুখী চাপের কারনে পারেন না, প্রতিনিয়তই দগ্ধ হতে থাকে, অপরাধ বোধ তাকে ক্রমাগতই দহন করে, একটু শান্তি পাবার জন্য ঈশ্বরের আশ্রয় প্রার্থনা করে। “উদ্বেলিত হৃদয়ের দীর্ঘশ্বাস মাখা চিঠির ফাইল বৃদ্ধ মাতাপিতার আশ্রয়”, কয়েকটি মাত্র শব্দ, দুটি লাইন বলে দেয় বাস্তবতা কতটা নির্মম!
“ঈশ্বর , দয়া করো আমায় , বৃদ্ধ মহেশের জন্য কেন এ বুক পোড়ায়!”,
চার লাইনে অনেক বেশী গভীরতা নিয়ে লিখেছেন, আমি খুব ভাল আলোচক নই, এতটা ধারন করতে পারি না, বুঝতে পারি অনেকটা কিন্তু প্রকাশ করতে পারি তার অল্প কিছুটা। শুভেচ্ছা নিরন্তর কবি, ভাল থাকবেন সব সময়।