আলোচনা ১৮৭
দুটো ধুমায়িত চায়ের কাপ, দুপিস টাটকা বিস্কুট, দুটি চড়ই পাখি, দুটি টিকটিকি, দুটি বিরহী বালিশ এবং দুজন মানুষ (একজন নারী, একজন পুরুষ), বস্তু জগত, প্রানী জগত এবং মানব জগত, প্রকৃতির নিশানা, রূপক অর্থে জোড়া জোড়া সৃষ্টি।
কিছু কবিতা, পড়তে বেশ লাগে, অনেক সময় প্রকৃত অর্থ না বুঝলেও ভালো লাগে আবার কখনো কখনো কবি’র ভাবের সাথে না মিলিয়ে ভিন্ন ভাবে ভাবতেও ভালো লাগে, কবিতার প্রথাগত ব্যকরন না থাকলেও ভালো লাগে। আলোচ্য কবিতাটি আমার তেমনি একটি ভালো লাগা কবিতা।
কবিতাটি পড়তে পড়তে, একটি চিত্রনাট্যের মতো চোখের সামনে ভাসছিলো। কবি রশিদ হারুন এর কাব্য “একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য জীবনের সিনেমা”।
দু’টি চড়ুই নিঃস্ব নিস্তব্ধতা ভেঙে খুনসুটি করছে বারান্দার গ্রীলে বসে, ভেন্টিলেটারে বাস করা টিকটিকি দু’টি মাঝে মাঝে উঁকি দিচ্ছে শূন্য ঘরের বিছানার দিকে...তাদের মধ্যে কোন দম্ভ, রাগ, অভিমান, অভিযোগ, ক্ষোভ, ঘৃনা...কিছুই আজ করছে না। কাক দুটো একত্রে খাবার এর নিশ্চয়তায় অপেক্ষারত।
কেবল মানুষ সব কিছু পাবার পরও, অহেতুক রাগ, হিংসা, ঘৃণা, অহংবোধের কারনে নিজেদের নিঃস্ব করে তোলে আপন মনে, নিজেদেরই কর্মফলে অথচ তারা নিজেরা নিজেদের চরম পাওয়ার উপলব্ধিতে পুলকিত থাকতে পারতো। বস্তু জগত, প্রানী জগত এবং মানবমনের পাশাপাশ খন্ডচিত্র, তুলনামূলক চিত্রায়ন কবিতাটিকে প্রান দিয়েছে নিজগুনে। প্রকৃতির বিশালতায় অন্য সবাই মানানসই কেবল মানুষ ছাড়া কেননা মানুষ প্রকৃতির ছন্দ মেনে চলে না, নিজেরা নিজেদের অহংবোধের দ্বারা চালিত হয়ে প্রকৃতির রীতিকে অস্বীকার করে চলে প্রতিনিয়ত।
আবার অন্যভাবেও ভাবা যেতে পারে, প্রকৃতির অন্যান্য প্রানী থেকে কি মানুষের কি শেখার আছে? বস্তগত অবস্থান কি মানুষকে কোন ম্যাসেজ দেয়? একেকজন পাঠক, একেকভাবে ভাবতে পারে, নানা ধরনের ইঙ্গিত আছে কবিতার পুরো গা জুড়ে।
আমার কাছে, কবিতাটি পড়তে ভালো লাগেছে, সেটাই প্রধান
কবি’র জন্য রইলো অফুরান শুভেচ্ছা