আলোচনা ১২০
কিছুদিন আগেই রেজাউদ্দিন স্তালিন এর একটি কাব্য “তদন্ত রিপোর্ট’ পড়ছিলাম, তার লিড কবিতা ছিল ‘তদন্ত রিপোর্ট’, অসাধারণ একটি কবিতা, মুল পতিপাদ্য বিষয় ছিল, এক বেওয়ারিশ যুবকের লাশ এর ময়না তদন্ত রিপোর্ট হবে কিন্ত সমস্যা হল, তার নাম জানা নেই, ধর্ম পরিচয় নেই ইত্যাদি, কবিতার শেষে কবি একটি মানবাতাবোধের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমধান দিলেন- যুবকের নাম মোহাম্মদ ডেভিড কৃষ্ণ বড়ুয়া।
কবি অসিত কুমার রায় (রক্তিম) ঠিক একরকম না হলেও, অনেকটা সেরকম আবেদন নিয়েই লিখলেন তার কাব্য “বেওয়ারিশ লাশ”। লাশেরও পরিচয় থাকা দরকার, লাশের ও ওয়ারিশ থাকা দরকার অন্যথায় ভিন্ন মেজাজে পৃথিবী থেকে তার বিদায় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ওয়ারিশ এবং বেওয়ারিশ লাশের মধ্যে অনেক পার্থক্য। একজন বেওয়ারিশ লাশের অকুতি ফুটে উঠেছে শেষের দিকে। সে বেওয়ারিশ হতে চায় না, ওয়ারিশ হতে চায়, কেন? লাশের আবার চাওয়া পাওয়া কি? ওয়ারিশ হলে তার লাভ কি? বেওয়ারিশ হলেই বা কি ক্ষতি? কবি বেওয়ারিশ শব্দের মাধ্যমেই অঙ্গুলি তুলেছনে সমাজ বাস্তবতার, মানবতার হুমকিকে আবারো স্পষ্ট করে দেখিয়েছেন। লাশের সাথেও সমাজ অমানবিক হতে পারে।
খুবই সাধারণ একটি প্রত্যুয় নিয়ে লেখা কবিতা, আমরা প্রতিদিন এরকম ঘটনার সম্মুখীন হই, অসখ্যবার উচ্চারন করি বেওয়ারিশ লাশ কিন্তু তার ঐ শব্দের মধ্যে কতটা অমানবিকতা, কতটা অমর্যাদা লুকিয়ে আছে তা খেয়ালই করি না। কবি তাই আরেকবার আমাদের মরিচা পরা বোধকে শানিত করার চেষ্টা করেছেন তার কাব্যের মাধ্যমে।
কবির জন্য রইলো একরাশ শুভেচ্ছা।