আলোচনা ১৮
আমাকে ভাত দাও’ খুব সাধারন একটি কথা, আমরা প্রতিনিয়তই অভ্যস্ত এজাতীয় কথা শুনে, পথে চলতে চলতে, গরীব, ভিক্ষুক, পথশিশু সর্বক্ষনই বলে থাকে, ‘ আমাকে ভাত দাও’, ‘খিদে খুব কষ্ট পাচ্ছি’ ইত্যাদি। কিন্তু কবি রোকন আহমেদ ‘আমাকে ভাত দাও’ কবিতায় খিদের কষ্ট অপেক্ষা বেশী কিছু বলতে চেয়েছেন।
প্রত্যেকটি মানুষ কতগুলো মানবাধিকার নিয়ে জন্মায়, যেমন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা। পৃথিবীর বেশীর ভাগ রাষ্ট্র একমত হয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন তৈরি করছে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। জন্মের সাথে সাথে মানুষ মৌলিক অধিকার ছাড়াও আরও কিছু মানবাধিকার ভোগ করবে, সে অধিকার নিশিত করার জন্যই মানবাধিকার সংগঠন।
পৃথিবীতে মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য, প্রত্যেকটি শিশুর যেমন কতগুলো মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন তেমনি, তার আইডেন্টিটি অর্থাৎ পিতৃ পরিচয় এবং মাতৃ পরিচয়ও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেই সাথে জন্মের পর থেকে প্রথম দুবছর পর্যন্ত মাতৃ দুগ্ধ পান, তার মানাবাধিকার। তাছাড়াও প্রত্যেকটি মানুষের তার জাতীয়তা এবং নাগরিকত্বের পরিচয় থাকা মানবাধিকারের মধ্যেই পরে।
আলোচ্য কবিতায় কবি বর্তমান সময়ের সমসাময়িক ঘটনা, মায়ানমার থাকে বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গা ইস্যু, সিরিয়ার রোহিঙ্গা ইস্যু সহ সকল রহিঙ্গা শিশুদের চিত্র একেছেন কিন্তু মুলত রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে দিয়ে অসভ্য পৃথিবীর রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ধিক্কার জানিয়েছেন। একটি অসহায় রোহিঙ্গা শিশুর মানবিক দুরবস্থার করুণ চিত্র একেছেন, ‘আমাকে ভাত দাও, আমাকে পিতা দাও, আমাকে মা দাও, আমাকে দেশ দাও…” এসব মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলেই আমি “আমি পিতৃহীন, আমি শিশু দুগ্ধহিন,আমি শক্তিহীন” ফলে জীবন হয়ে উঠেছে ‘অসহায়, লালিত স্বপ্ন বঞ্চিত হচ্ছে, প্রতিরোধের কণ্ঠ গুলিবিদ্ধ হচ্ছে, জীবনের পরতে পরতে নির্যাতন নেমে আসছে, মানুষের পরিচয় হচ্ছে রহিঙ্গা”।
সবশেষে এক রোহিঙ্গা শিশুর করুণ কণ্ঠে মানবিক আবেদন জানিয়ে শেষ করেছেন, ‘আমাকে বাঁচতে দাও, তোমাদের মত আমি মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই”।
কবিকে অন্তরিক ধন্যবাদ এমন একটি মানবিক ইস্যি নিয়ে কবিতার মাধ্যমে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। ভাল থাকবেন।