“বিলাস” শব্দটি নানা ইস্যুর সাথেই ব্যবহার হতে দেখি, যেমন-দুঃখ বিলাস, কষ্ট বিলাস, তন্দ্রা বিলাস, ইত্যাদি। বিলাস শব্দটি বিশেষ্য পদ এর অর্থ সৌখিনতা, সুখভোগ, কেলি, লীলাউদ্যান ইত্যাদি। কবি নিজেও ব্যবহার করেছেন,”স্বপ্ন বিলাস”। বিলাস শব্দটির সাথে অস্তিত্বের সম্পর্ক খুব একটা নেই, এটা অনুভবের বিষয়, একইভাবে “স্বপ্ন”র অস্তিত্বের চেয়ে অনুভবের সাথে সম্পর্কিত বেশি।
জীবনকে আমরা কে কিভাবে দেখবো, দেখতে চাই? অনুভবের মোড়কে নাকি চাক্ষুস অস্তিত্বের ভারে? স্বপ্নের আক্ষরিক কোন সীমারেখা নেই, স্বপ্নের সীমারেখা অসীম, কিন্তু স্বপ্নকে খন্ড খণ্ড রূপে আমরা দেখতে চাই, বাস্তবায়ন করতে চাই, কখনো বাস্তবায়ন করতে পারি কখন পারি। যখন পারি না তখন হতাশ হয়ে পরি। অন্যকে দায়ী করি, সিস্টেমকে দোষারোপ করি, কখনো বা ভাগ্যকে দায়ী করি।
কবি মোঃ আল মামুন, তার “স্বপ্ন বিলাস” কবিতায়, এই বিষয়কেই মূখ্য উপজীব্য করেছেন।
জীবন আমার স্বপ্নের চারণ ভূমি
নিত্য সেথা স্বপ্ন বুনি
আমরা পুরো জীবন ধরেই স্বপ্নের চাষাবাদ করি, জীবনেটাকে চাষাবাদযোগ্য ভুমির সাথে কল্পনা করা যায়, সেখানে স্বপ্নের বপন করে থাকি কিন্তু সব সময় ফসল ঘরে তুলতে পারি না। কৃষক ফসল উৎপাদনের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে কিন্তু নানাবিধ কারনে ফসল উৎপাদন হয় না আবার উৎপাদন হলে সব সময় ঘরে তুলতে পারে না।
নৌকা চলে ঢেউয়ের তালে
স্বপ্ন দেখে জেলে জালে
চমৎকার উপমা ব্যবহার করেছেন কবি, নদীতে ঢেউয়ের তালে তালে নৌকা দোলে, সামনে এগিয়ে চলে,মানুষের স্বপ্নও জীবনের ঢেউয়ের তালে চলে, এগোতে চেষ্টা করে প্রতিনিয়ত। সব স্বপ্ন সফল হয় না তারপরও আমরা স্বপ্নের পিছু ছাড়ি না, জীবনের ঢেউয়ের তালে স্বপ্নের পাশাপাশিই থাকি।
স্বপ্ন আমার নয় শুধু স্বপ্ন
এটি মহা চেতনা
নিরবে নিভৃতে করে যাবো
তারই বন্দনা।
সবশেষে কবি বলেন, যা আমার ভালো লাগার জায়গা তৈরি হয়েছে- স্বপ্ন এক ধরনের চেতনা, সেটা সব সময়, সফলতা কিংবা বিফলতার সাথে সম্পর্কিত নাও হতে পারে, চেতনা ধারন করতে হয়, চেতনায় বলীয়ান হয়ে জীবনের জার্নি চলে, চেতনাবিহীন জীবন হয় না। জীবন, চেতনা এবং স্বপ্ন এক সূত্রে গাথা, সমান্তরাল নয়, এক সূত্রে বলীয়ান।
কবি’র জন্য রইলো অফুরন্ত শুভেচ্ছা।