সোনা, একি তুমি কাঁদছো - পড়েছে মনে ?
এমনি ভাবে একদিন এসেছিলাম তোমার জীবনে ?
সাইবেরিয়ার কোনো রেলপথে নয়, নয় বাকিংহামএর কোনো রাজপথে,
স্বপ্ন-ভাঙা কোনো এক রাতের নিঃসঙ্গ আনমনে ।
ইওসিন যুগে একদিন আমরা খুব কাছে ছিলাম,
আরো কত কাছে এসেছিলাম - সেই স্বপ্নে-ভেজা ভোরবেলা ।
লিলি টিউলিপ আর হাস্নাহানার কোলে তোমার সাজানো দোলা,
কত নীল পদ্মের ডানার পেছনে কত লুকোচুরি খেলা ।
ফুটে ছিল সব ফুল যেথায় তোমার ছোঁয়া পড়েছিল ঘাসে ঘাসে
কত মধুকর ফুলের ডিঙা ভাসিয়ে তোমার মধু নিতে আসে ।
কত শিউলি বেলি হাত বাড়িয়ে তোমায় সাজাতে এসে -
লাজ রঙের লাজে মরে-তোমার আবেশে ।
আমায় বলেছিলে , "উড়বে তুমি "? এই নাও নীল পরীর পাখা ;"
হারানোর ভয়ে সেদিন মনে বেঁধে আমায়, তোমার চোখ বুঝে রাখা ।
দিনের শেষের বেলায়, চিলের অন্ধ ডানায়, সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে
কোথায় যেতে হবে আমায় সব পিছু ফেলে ?
যাযাবরের মতো সময়ের সাথে হেরে,
ঢেকে তোমায় বিরহের চাঁদরে,
নীল পরীর স্বপ্নে ঘুম পাড়িয়ে-বলেছিলাম
"আমি চললাম"
সেই দিন আমার আকাশে শ্যেন-পাখির মরণ আর্তনাদ শুনেছিলাম ,
শাশ্বত সেই অভিমানে আজও শিশির রাতের পিছু করে ।
আজি কার খোঁজে নাবিক হারালো সমস্ত পারাপার ?
কোথা থেকে ভেসে আসে নিঃশব্দ চিৎকার ?
গুমরে থাকা কার কান্নার ঢেউ আঘাত পায় ভেলায় ?
অন্ধ সমুদ্রে মন ফিরে ফিরে দেখিতে পায়
কোন প্রেয়সীর নিষ্প্রেম লাশ ভেসে যায় ?
ক্লান্ত নাবিক নিগন্তহীন মাঝ পথে হারায়ে ,
"তুমি-হারা " গ্লানতায় সব নিঃস্ব-প্রায়,
দেখে - কে আছো তুমি আজ শিওরে দাড়ায়ে ,
জ্বালিয়ে নয়নের প্রেম-দীপখানি ,বলেছিলে এমনি, "একটু ঘুমোও সোনা
আমিও তো কত পথে খুঁজেছি তোমায় ,না পেয়ে ঠিকানা
কোথায় ছিলে এতদিন আমায় এভাবে ছেড়ে ছেড়ে ।।
আর কত তা নীল পরীর ডানা দিলে
তোমায় পাবো ফিরে ?"
রাতভর দীপ জ্বলে, তোমার স্পন্দনে ডানা মেলে;
তোমার আঁচলে কেঁপে ওঠে সমুদ্রের হাওয়া,
শুনতে পাই নিঃশব্দ কত অভিযোগ -পাওয়া না পাওয়া ।
সেই অভিমান আজও শোনে প্রেম ,তোমার বুকে মাথা নত হওয়া,
শাশ্বত জীবন বয়ে যায় ,তোমার খেয়ায় ,সাঙ্গ না হয় এমনি তরণী বাওয়া।