কারো কারো মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে যায় -
মৃদু, ক্ষীণ পায়, ঝুল-বারান্দায়
একটু নিঃশব্দ পায়চারি ;
হঠাৎ থমকে দাড়িয়ে দেখে কালো আকাশের দিকে -
প্রেমাতুরের মতো, নিশার অনুরাগে নত,  স্নিগ্ধ স্নাতো,  
মহাকাশের নীলাভ এখনো হয় নি ফিকে ।
মনে হয় তারায় সাজানো বাসর ঘরে
মহাকালের পিয়াশায় বুক ভরে
কোনো প্রেয়সী অতৃপ্ত রাত এমনি জেগে থাকে ।

হতাশায় ভরে ওঠে মন -  কোনো অতীতের ব্যর্থতার গ্লানতায়, জীর্ণতায় ;  
কত কাল কেটে গেলো - পাওয়া আর না পাওয়ার খেলায় ;
আজীবনের এই লুকোচুরি - দেখা আর না দেখা ,
মনে হয়ে যেন কারো পেছনে বৃথা তাড়া করায়-
অবশেষে সামনে মৃগতৃষা, পিছনে অদৃশ্য ছায়ার মায়া -
আর তুমি একা !
তবে একোন নিশ্চিন্ত আশ্রয় খুঁজে,
বালিশে, আমার বুকে মুখ গুঁজে
শুয়ে  আছে কে -  সুঠাম, সমর্পিতা ?
আর ওই নধর  শিশুটা  ?
ওরা যদি আমার প্রিয়তমা স্ত্রী অথবা প্রিয় সন্তান না হয়
তবে কার তরে, অফিসে উচ্চত্বরে, এতো তোষামোদ , কলিগদের হাসিঠাট্টা ?
                  
একদিন যেন বাবা বলেছিলো - খোকা এগিয়ে যাও ;
বাবার চোখ বুঝে গেলো ,
সেই চোখ বোজা অন্ধকারে, খোকা আর এগোতে না পারে,  
পেছনে পিছু করা ছায়াপথে, নীরব, নিভৃতে আড়ি পাতে
শৈশব-খেলার সাথী ; সেই হাত-ছানি থেকে  
পালিয়ে ছোটা এক পথ চলে অসমাপ্ত,
দিনের এই জনারণ্যে ভিড়,  
রাতের আকাশ তারার পথে - এই মহান একাকিত্ব !
হটাৎ ঘুমের ঘোরে, পাশ ফেরে,  শিশুটি মনে হলো অস্ফুটে - বাবা বলে ডাকে;  
একটু  দীর্ঘশ্বাস ,
তারপর ফিরে চাই বিছানার দিকে ।