আকাশে মেঘ ডাকছে গুরু গুরু,
ঝড়ো হাওয়ায় বক্ষ কাঁপছে দুরু দুরু
কি জানি কিসের ভয়ে?
হাঁসফাঁস করা জীর্ণতার কংক্রীটের শহরে
জনৈক এক সৈনিক কি যেন ভাবছে -
চারিদিকে এই ব্যস্ত সভ্যতার অন্তরালে,
নির্জনতার ছায়ায় আর নিষ্প্রাণতার বেড়াজালে
সে আবিষ্কার করেছে একটি কথা -
   “যে সে সম্রাট।”

   হ্যাঁ, আমি সম্রাট !
সব ভীরুতার বন্ধন ছিঁড়ে
আমিই এক স্বঘোষিত সম্রাট,
সাম্যবাদ, গণতন্ত্র, বাম-দক্ষিণ বাদ
সকল পন্থার কালিমা ঘুচিয়ে
লিখতে বসেছি ইতরতার জ্বলন্ত ইতিহাস।
কলমের কালি আজ নীল থেকে লাল
ক্লান্তিতে হয়তো চোখ বুজেছে ক্ষণকাল
কিন্তু কোনো শোষণ কি করেছি আমি ?
যেমনটা তোমরা করো !
সাবেকী নেতার সাদা পোষাক পরা
জুলজুলে চোখে ক্রুরতা ভরা,
মুখে নিয়ে ভবিষ্যৎ সুখের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি
কালের বিধানে তোমাদেরও হবে নরকের সদগতি।

অভিজাততন্ত্রের বিরোধিতায় সরব হও সবাই
বাস্তবতার কোপে মরছে দলিত-অবহেলিতরাই
যার স্তূপে তোমাদের ধর্ম যায় না চেনা।
যেমন চেনা যায় না সহস্র মানুষের ভিড়ে
অন্তরালে পড়ে থাকা কঙ্কালসার দেহ,
জীর্ণ বস্ত্রধারী এবং মুখে ফ্যাকাসে হতাশা
ভিক্ষার বাটিই তাদের বেঁচে থাকার আশা,
কেন এত দরিদ্রের রস চুষে খাও বলতো ?
  হ্যাঁ, আমিই একরাট্ !
চূর্ণ করবো তোমাদের কারসাজি যত।

তোমাদের মত দলবল নিয়ে
আমি তো আর গরিবদের রস চুষবো না,
আমি শুধু খেয়ালীর তান বাজাবো।
ভিখারী মায়ের জলভরা চোখে
হাসির বিদ্রুপ দেখতে দেখতে
আমি দুমুঠো ভাত খাব কিংবা খাব না,
তবে আমি গাইবো: সময়ের গীত গাইবো।
গরিব কুটিরে আমি মিশিয়ে দেব গা
হালের টানে করব মাটিতে চাষ
বৈঠা টানব আমি মাঝিদের দলে
সাথে নিয়ে বুকভরা আশ্বাস।

তখন সারা বিশ্ব আমার হবে।
আপন হয়ে যাবে আমার ব্যক্তিগত জগৎ।
তারপর তারাখসা দিগন্ত থেকে রাজত্ব করব আমি
এই গরিবদের মাঝে, একসঙ্গে - এক আত্মায়
তাই নিজের মনের আয়নায়
   আমিই সম্রাট !