আমি চলে গেলে কি দেনা পাওনা
থাকবেনা কোন আর্তনাদ
স্বপ্ন কাটিয়ে ঘুম চোখে
কেউ কখনো বাড়াবেনা হাত।
আমি চলে গেলেই ফাল্গুনি হাওয়ায়
উড়বে মুখ পাশে এলো কালো কেশরী চুল
বারান্দায় গ্রিলে মাকড়সার দল
শুনাবে গল্প, দিবে রং বাহারি ধুল।
আমি চলে গেলেই
আর কেউ হারাবেনা দুর্গম পাহাড়ি পথ
তৃষ্ণার সাগর হয়ে অপেক্ষমাণ পথিক
ভুলে যাবে যত তার দুঃখ সরোবর।
আমি চলে গেলেই ঋণ মুছে যাবে
থাকবেনা কয়েক শতক দীর্ঘশ্বাস
আমারি লিখা কাব্য কবিতার ধুলো
রাখবেনা আর কখনো তোমার দেয়ালে হাত।
আমি চলে গেলেই প্রখর রৌদ্রুরে
ভ্যাপু বাজিয়ে ভাঙ্গা রাস্তায় চলবে ট্রাম
যান্ত্রিক নগরীর ব্যস্ত কোলাহল ময়তায়
মায়া চোখে জননী রাখবেনা কোন অজুহাত।
আমি চলে গেলেই ডের ভালো হবে
ক্ষণচারী আমার মমতাময়ী অস্পষ্টতার
উৎসব হবে হাটে মাঠে শহরের অট্টালিকায়
বাউল গানে জ্বলবে প্রদীপ তব উল্লাসিতার।
আমি চলে গেলেই, দহনে আর
উড়ে যাবেনা আর বেধে নৌকার ডেউ
আমি চলে গেলেই তোমার কণ্ঠে
আর্তনাদের প্রার্থনা হবেনা তো কেউ।
আমি চলে গেলেই,
ঘাড় অন্ধকার হেসে দিবে আলোতে
নিমিষেই যাবে মুছে কলঙ্ক যত
আচড়ের ক্ষত সব যাবে চিরতরে মিশে।
আমি চলে গেলেই স্বাধীনতা পাবে রাষ্ট্র
মুক্তি ক্ষুধা দরিদ্রতা কিংবা ধর্ষিতার
বুকের বুলেটে লাশের মিচিলে
থাকবেনা ১৪৪ ধারা আর।
আমি চলে গেলেই বসন্ত আসবে
কোকিল ডাকা কুহুকুহু সুর
আমি চলে গেলেই নদী তীরে
ফুটবে প্রিয় মোর কৃষ্ণচূড়া ফুল।
আমি চলে গেলেই কি দেনা পাওনা
লাশের শবের আগুনে শেষ হবে যত হাহাকার
আমি চলে গেলেই
নিষ্পাপ হৃদয় কেঁদে উঠবেনা কখনো আর।
আমি চলে গেলেই
মুক্তি তোমারও, মুক্তি দেনা পাওনার
ডোমের লাশে ফুল দিওনা
এতটুকুই মিনতি আমার।