ছেলে দুটি হই-হই করে ফিরছে
চোখে মুখে আনন্দের ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে
ছাত্র বোধ হয়! অন্তত স্কুলের ইউনিফর্ম
সেই পরিচয়-ই বহন করে।
সম্ভবত তারা সিক্স-সেভেনের ছাত্র হবে।
কিন্তু এত হাসি, এত আনন্দ কেন?
পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে কি? নাকি পুরষ্কার পেয়েছে?
কৌতূহল বশত জিজ্ঞাসা করা হল তাদের।
এদের মধ্যে একটি ছেলে উৎসাহে জবাব দিল
- "দীপক স্যারকে থাপ্পড় মারসি"
- কোথায় থাপ্পড় মেরেছ?
একই রকম উৎসাহে সে জবাব দিল-
- "দীপক স্যারের মাথায়"।
-মারলে কেন?
-"মারতে ভালো লাগসে"
মনটা ভীষণ নাড়া দিয়ে উঠলো।
কে এই দীপক স্যার? থাকেন কোথায়?
না, এগুলো আমার জানার কথা নয়,
জানি শুধু তিনি একজন মাস্টার মশাই।
আচ্ছা তার অপরাধ কী? কোনো অপরাধ
করলেও মাস্টারমশাইকে প্রহার করা কী সাজে?
এই অপরাধ কার? ছাত্রকে মানুষ করতে
না পারা যদি অপরাধ হয় সেই অপরাধে
হয়তো তিনি অপরাধী।
মানুষ গড়ার কারিগর যিনি, তাকে অসম্মান
ভাবলেই একরাশ ক্ষোভ জন্মায় মনে।
ভয় হয় ছেলেটির মধ্যে বিন্দুমাত্র
অপরাধ বোধ না দেখে।
দীপক স্যারের কত ক্ষতি হলো বলতে পারি না।
কিন্তু ছেলেটির ভবিষ্যৎ যে অন্ধকারাচ্ছন্ন
তা সচেতন মনে অনুভব করতে পারি।
কিন্তু এই লজ্জা কার? তার এই থাপ্পড় কি
শুধু দীপক স্যারকেই আঘাত করেছে?
না, তার এই থাপ্পড় আঘাত করেছে
সমগ্র জাতিকে, লজ্জাও সমগ্র জাতির।