ভুলে থাকি আমি
ভুলে থাকতেই যেন সদা সচেষ্ট আমি
প্রিয় স্বদেশকে, মায়ায় মগ্ন করা দেশের মানুষকে
বার বার আমার মনে তবু হানা দেয় স্বদেশ,এই দূর পরবাসে
আবেশে অবশ হয়ে যায় আমার কর্মচঞ্চল দক্ষ হাত।
কচুরিপানার ফুল ময়ূরের পেখম হয়ে নাচে চোখের তারায়
মাচা ছেড়ে আমায় দেখতে এগিয়েছে যেন স্বেচ্ছাচারী সবুজ লাউডগা,
বিলের বুকে একলা বাঁশের মাথায় মগ্ন মাছরাঙা মাছের আশায়
রূপালী ইলিশের বুকে সোনালী রোদ ঝিলিক দেয় প্রলুব্ধকর,
নতুন রঙ মেখে রোদে পিঠ শুকায় নদীতীরে নৌকোর দল কুমিরের মত,
স্রোত কেটে উজানে-ভাটায় ছুটছে ছৈ তোলা,পাল উড়ানো কতক।
আকাশ ঢেকে রাখা বিশাল বটের ছায়ায় আমি অলস থাকি বসে,
জোছনা রাতের ধানের খেতে নিঃসঙ্গ দাঁড়ানো কাকতাড়ুয়াকে আমি মনের কথা বলি।
গ্রাম্য পথটা নিরলস দৌড়ে পীচঢালা পথ হয়ে এসেছে শহরে
অজস্র দেয়ালের খাঁচায় বন্দী মানুষের কোলাহল,তারে তারে কাকেদের কা কা
ব্যস্ত রাস্তার পাশে সস্তা হোটেল, চা-সিংগারা ঘিরে তুমুল আড্ডা
মেজাজ খারাপ করা মানুষ অনেক,তাদের শান্ত করার লোকও কম নেই
কিলবিল করা যানের কান ঝালাপালা করা শব্দ যন্ত্রণা।
শব্দময় এই শহরটাই মাঝরাতে মাঝে মাঝে আমার ঘুম ভেঙে দেয়
আমি নিস্তব্ধ বিদেশী রাতে নীরবতা ভেঙে ফেলি, দীর্ঘশ্বাসের শব্দে..
অজান্তে ঝরে পড়া তপ্ত অশ্রুজলের স্পর্শে ভাঙে ঘোর......
প্রিয় স্বদেশকে আমি ভুলে থাকার ছল করে যাই
আমার ছলছল করা ঝাপসা চোখের পর্দায় তবু বার বার ভেসে ওঠে অনেক অনেক লুকানো ছবি।
অনেক হারানো গান কানে বাজে অজানা কোথা থেকে.....
" তোমাকে ছেড়ে শুধু ভালো থাকার ভানই করে যাই প্রিয় স্বদেশ
তোমাকে ভুলে থাকতে চাইলেও
আমার দুঃখ ভোলাতে তুমিই আসো
মায়ার পরশ নিয়ে মনে বার বার। "