আমার জাতিস্মরের চোখ আজও দেখে সেই দিন,
উল্লাসে উদ্বেল সেই আলোড়িত জনপদ,
শ্লোগান-মুখর চত্বরে উত্তাল জনতার স্রোত ।
যেদিন শ্বাপদের দল হয়েছিল নতজানু,
হে গর্ভধারিণী, তোমার অভ্যুদয়ে ।
অগণিত মানুষের ভিড়ে খুঁজে ফিরি সেই আলোকিত জনের মুখ ,
যার চিন্তায় ছিলে তুমি,
যার ধমনীতে ছিল তোমার হাজার নদীর প্লাবন ।
যার দেহ জুড়ে ছিল তোমার সোঁদা গন্ধ,
বুলিতে তোমার ভাষা, কন্ঠে তোমার গান, আর হৃৎপিন্ডে মহাকাশ ।
তোমায় এনে দেবে বলে চিরন্তন সোনালী দিন,
বুনোহাঁসের পাখায় চেপে তারাদের দেশে ছুটেছিল যারা,
তোমার সন্ততি, আমার আদিপুরুষ ।
এখন অন্যকাল।
শব্দহীন আর্তনাদে ডানা ঝাপটায় বুনোহাঁস,
করোটীর কুঠুরীতে, নিউরনের জালে জালে।
বিস্মৃতির মোড়ক ঢাকে তারাদের ইতিহাস,
অর্বাচীনের কলমে বিকৃত হয় তোমার জন্মকথা ,
বিভাজনের বিপণন ভাঙ্গে আদিপুরুষের স্বপ্ন ।
এ কৃষ্ণ-গহবরে আজ কিংকর্তব্যবিমূঢ় আমি, এক উত্তরপুরুষ ।
আদিপুরুষের তুলিতে আঁকা তোমার অস্তিত্ব
যুগান্তরের পরিধি পেরিয়ে হাজার আগামি পরে,
পৌঁছে দেবার দায়ভারে আজ শঙ্কায় বুজে চোখ।
চোখ মেলে দেখি দাঁড়িয়ে আছি জবাবদিহির কাঠগড়ায়,
প্রশ্নভরা দৃষ্টিতে স্থির তাকিয়ে রয় আমার উত্তরপুরুষ।