মনে পড়ে অতীতকালের দিনগুলো
ভুলো-মন কোণে আজো তা রয়ে গেলো।
অতীতকালের হাজারো স্মৃতি মধুর
হাসি হাসি মুখটি ছিল গ্রাম্য বধূর।
অলস ক্ষণে রাখালের বাঁশির সুর
করতো সকল মনের বিষাদ দূর।
খোলা মাঠে করতো শিশুরা নাচানাচি
একত্রে ছেলে-মেয়ে খেলতো কানামাছি।
পাখির নীড়ে দুষ্টু ছেলে ছুড়লে ঢিল
তার পিঠে পড়তো এসে শতেক কিল।
ঢিলে আহত হত যদি পাখির ছানা
দুষ্টু ছেলেকে দিতেন বকা দাদা-নানা।
খাল-বিল, নদী-নালায় নাচতো মাছ
দেশি তাজা ফলমূলে ছিলো ভরা গাছ।
দামাল ছেলে নদী তীরে বেঁধে কাতার
তীব্র স্রোতে ঝাঁপ মেরে কাটতো সাঁতার।
গ্রাম্য কিশোরের মজার খেলা ডাংগুলি
খেলতো মিলে মিঠু-নুরু-শফি-গাঙ্গুলী।
ছটফটা কিশোরীরা বেণী বেঁধে চুল
মিলেমিশে সাজাতো দিয়ে হিজল ফুল।
গাছের ডালে ঝুলিয়ে দোলনার রশি
আনন্দে দোল খেতো বান্ধবী পান্না-শশী।
কাঠবিড়ালী আম-জামের ডালে ডালে
নাচতো তাদের দোলনার তালে তালে।
নারকেল পাতায় তৈয়ার করে ঘড়ি
পরতো শিশু-কিশোর দুই হাত ভরি।
শিশুরা সুপারির শুকনো ডালে বসে
পাড়া গাঁয়ের আশপাশ বেড়াতো চষে।
মেঠোপথ ধরে চলতো গরুর গাড়ি
চলতে চলতে খানাখন্দে গড়াগড়ি।
গাড়িয়াল সুখ-মনে দিলে গানে টান
রাঙা বৌ তখন করতো বেজায় মান।
ধনী-গরিব ঢেঁকিতেই ভানতো ধান
অবসরে গাইত সবাই জারি গান।
গ্রামের লোকজনও ছিল দুধে ভাতে
তাদের সুখনিদ্রাও হতো দিনে-রাতে।
খেলতো শিশু কাপড়ের পুতুল নিয়ে
গাছের ডালে বসে দেখতো রাঙা টিয়ে।
দেখে চঞ্চলা কিশোরীর কাজল আঁখি
সুরে সুরে ডাক পাড়িতো ময়না পাখি।