=====================
নমস্কার বন্ধুরা, শুভ নববর্ষের প্রীতি, শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানিয়ে এই লেখা শুরু করলাম । কারণ এই লেখাটা যখন আপনারা পড়া শেষ করবেন, ততক্ষণে হতাশা, গ্লানি ও ক্রোধ আপনাদের উপরে ভর করতে পারে, কারণ এটা যতটা না বিনোদনমূলক, তার চেয়ে অনেক, অনেক বেশী বিতর্কমূলক ।
আচ্ছা আপনারা নিশ্চয়ই বেন জনসনের নাম জানেন । সেই কলঙ্কিত স্প্রিন্টার । খুব ভালো দৌড়বীর ছিলেন কিন্তু আদতে তার সাথে ছিলেন একজন প্রতারক । প্রতারণা করেছিলেন তিনি তার আপামর ভক্তদের ও সাথে সেই খেলাটার প্রতিও । এরকম উদাহরণ ভুরি ভুরি আছে। এই তো সেদিন ডোপিং এর দায়ে নাম জড়ালো আর এক খেলোয়াড় শারাপোভার । সত্যি বলতে গেলে এরকম উদাহরণ সব প্রফেশনে এবং সব জায়গাতেই দেখতে পাবেন ।
এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন আমি কাদের নিয়ে কথা বলছি ! কিন্তু কেন এই লেখার অবতারণা সেটা বুঝতে পারছেন না এটাও জানি। একটু ধৈর্য্য ধরলে সব জানতে পারবেন । হ্যাঁ আমি এক প্রতারক ও তার প্রতারণার কথা বলতে এসেছি । কিন্তু এখানে কেন ? কারণ প্রতারক হল এই কবিতার আসরের এক জনপ্রিয় চরিত্র বা অনেকগুলি চরিত্র একসাথে । আমাদের এই আসর এর আগেও অনেক ধরণের প্রতারককে দেখেছে, যারা একটু পুরোনো, তারা নিশ্চয়ই স্বার্থপর ছেলে বা মালিহা খান দুজনের কাউকেই ভুলে যান নি । যদিও তারা আজ নেই, তবুও তাদের প্রতারণাগুলো আজও রয়ে গেছে । সেইরকম আরো এক বিশিষ্ট প্রতারণার কথা বলব এবারে এখানে । তবে তার আগে কিছু কথা বলে নিতে চাই -
আপনাদের কি মনে হয় একজন মানুষ কখন ছদ্মবেশ ধারণ করে? যখন তিনি চান না তার আসল পরিচয় কেউ জানুক । কারণ যাই হোক, উদ্দেশ্য কিন্তু ওটাই । সেরকম ভাবেই একজন কবি যখন ছদ্মনামে কবিতা লেখে তখনও তার কিছু কারণ থাকে, এবং তা অনেকধরণের হতে পারে। কিন্তু উদ্দেশ্য সেই একটাই, নিজেকে সকলের কাছে গোপন রাখা । তা ভালো , একজন কবির কাছে বা তার ভক্তকূলের কাছে তা কখনোই আলোচ্য বিষয় নয় । কিন্তু সেই কবি যদি শক্তিশালী লেখক হন ? তার লেখার গুণে তার যদি ভক্তের সংখ্যা বেড়েই চলে দিনের পর দিন ? তবুও কি তার ছদ্মনামে লেখার দরকার আছে ? আচ্ছা তাতেও কবির ভাবাবেগ বুঝে মেনে নিলাম যে হ্যাঁ হয়তো ওনার দরকার আছে ।
কিন্তু যদি দেখা যায় তিনি একসাথে অনেকগুলো ছদ্মনামে লিখছেন একই জায়গায়, একই আসরে ? তবে সেটাকে আমরা কি বলব ? একজন যথেষ্ট প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন ও অসাধারণ কবিতার জন্মদায়ক কবির কি দায়, বিভিন্ন সময়ে অথবা একই সময়ে বিভিন্ন ছদ্মনামে কবিতা আসরে দেওয়ার ? জানি আপনারা বলবেন সেটা তার ইচ্ছে, আর সেই কবি এই লেখাটা পড়লে বলবেন তিনি বিভিন্ন ছদ্মনামে কবিতা লিখতে আনন্দ পান, এক্সপেরিমেন্ট করেন, কবিতার ওজনের সাথে যাবে এরকম ছদ্মনাম বার করেন ।
কিন্তু আমি বলব ভাঁওতা, স্রেফ জালিবাজি ও প্রতারণা । প্রতারণা করে চলেছেন উনি আমাদের সবার সাথে, এই আসরের সাথে, আসরের এডমিনের সাথে, এই আসরের কবি ও পাঠকদের সাথে । রেগে গেলেন নাকি? এর মধ্যে প্রতারণা কোথায়? আরে দাদা দাঁড়ান, আগে শুনুন তারপর না হয় আপনাদের কথা শুনব ।
কি ভাবে প্রতারণা করেছেন উনি ? তাহলে বলি এক এক করে -
1. প্রথমত বিভিন্ন ছদ্মনামে একসাথে একের বেশী কবিতা হয়তো বিভিন্ন আই পি থেকে পোষ্ট করেছেন । তা করতেই পারেন, এতে আপাতদৃষ্টিতে অন্যায়ের কিছু নেই, তবে যদি করে থাকেন তো এই আসরের এডমিনের বেঁধে দেওয়া নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন ।
2. নিজের একনামের পোষ্ট করা কবিতাকে নিজেই সমালোচনা, বিশ্লেষণ, উদার প্রশংসা করেছেন অন্যনামে যা দেখে আমরা প্রথম নামের কবিতা রচনা ও দ্বিতীয় নামের কবিতার বিশ্লেষণী ক্ষমতার প্রশংসা করে মন্তব্যর পর মন্তব্য দিয়ে ভরিয়েছি অথচ তখন জানতেও পারিনি যে দুজনেই একই লোকের দুই ছদ্মনাম । কি বলেন আপনারা এটা প্রতারণা নয় ?
একটা উদাহরণ দিই - এক ছদ্মনামের এক কবিতার শেষে ইনি প্রথম ছদ্মনামের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করলেন - " এরকম অসাধারণ লেখার বিশ্লেষণ করার সাধ্য আমারও নেই"। এই মন্তব্য দেখে অনেক কবি যেমন কবি অনিরুদ্ধ বুলবুলের মতো কবিও দ্বিতীয় ছদ্মনামের ভেকধারী কবিকে উদ্দেশ্য করে বললেন যে সত্যি তাদেরও নেই এই কবিতার বিশ্লেষণ করার ।
হা হা হা, কেমন ভাবে বোকা বানিয়ে প্রথম ছদ্মনামের লেখাকে আউট অব দ্য ওয়ার্ল্ড বানিয়ে দিলেন ইনি ! সাথে সাথে সকলে বলে উঠল সাধু সাধু ! এটা কবি অনিরুদ্ধ বুলবুলকে প্রতারণা করা নয় ? বুলবুল সাহেব কি বলেন এটা নিয়ে তার অপেক্ষায় থাকলাম ।
3. এরকম অনেক আছে । কখনো নিজের এক ছদ্মনামের প্রশংসা, কখনো আলোচনায় নিজের শো অফ করা, কত কবিতা পড়েছেন আজ পর্যন্ত, কি কি তার মুখস্ত এসব সংলাপ খুব সন্তপর্ণে নিজের বিভিন্ন ছদ্মনামে পোষ্ট করা আলোচনা বা কবিতাতে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন শুধু নয়, আবার অপর ছদ্মনামকে দিয়ে তা অ্যাকসেপ্ট করিয়ে সকলকে দেখানো হয়েছে যে যা বলেছেন সব সত্যি । কি অসাধারণ পরিকল্পনা মানসিক প্রতারণার । আমার প্রশ্ন- আপনি 50 হাজার কেন, পাঁচ লাখ কবিতা পড়তে পারেন কিন্তু তা এখানে বলার কি আছে ? আপনি যদি সত্যি এত বড় কবি হন, মাত্র দু তিনবছরে কবিত্বসত্বা আপনার এতটাই জাগরিত হল, তাহলে মরতে এই সৌখিন কবিদের আসরে কেন এসেছেন ? আপধার হাতে সাহিত্যে নোবেল দেখতে চাই আমরা। কিন্তু এখানে আপনি আসেন বিভিন্ন ছদ্মনামে কারণ আপনিও ভালো করে জানেন প্রতারণা করার সবচেয়ে ভালো জায়গা এটা ।
4. আপনার যে কটা ছদ্মনাম এখন পর্যন্ত জানিয়েছেন আমাদেরকে, তাঁর বাইরেও আরো দু তিনটে আছে এই আসরেই । সেরকমই একজন দেখলাম এনার সম্পর্কে আলোচনায় দিয়েছেন যে এনার মতো কবি নাকি এই দুই বাংলায় এখন নেই ।সকলে এগিয়ে এসে এনার কাব্যগ্রন্হ তৈরী করুন । আবার একটা ট্রিক্স নয়তো? আবারও প্রতারণা নয়তো? সন্দেহ হচ্ছে এটাও তাঁর নিজের আরো একটা ছদ্মনাম হয়তো । যাতে এই প্রতারণার শিকার হন আবার আমাদের মতোন কেউ।
কি বলেন আপনারা ? এত ভালো কবির কি এরকম প্রতারণা করা সাজে ? যার লেখায় অমৃত সে কাজে এমন বিকৃতমনস্ক কেন ? সাবধান হোন । আজ দেখলাম এক ছ্দ্মনামের লেখা কবিতাতে আরেক ছদ্মনামের করা মন্তব্য ডিলিট করা হয়েছে । যাতে সেগুলোর কোন ট্রেস না থাকে । কিন্তু হায়, সেই মন্তব্যর উপর ভিত্তি করে অন্য কবি যে মন্তব্য করেছে সেগুলো ডিলিট করতে ভুলে গেছে । আর কে না জানে অপরাধী অপরাধের নিশানা ঠিক সেখানেই ছেড়ে আসে যেখানে অপরাধ ঘটায় ।
এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কার কথা বলছি, আর কেন বলছি ? আপনাদের কাছে অনুরোধ এরকম প্রতারণার কাছে ভেবেচিন্তে আত্মসমর্পণ করবেন । অনেকে ভুল বুঝবেন তাও জানি তবু বলছি একথা কারণ আমি, আপনি সকলেই এর প্রতারণার শিকার । আমিও কোন এক ছদ্মনামকে ভগবানের আসনেই প্রায় বসিয়েছিলাম, কিন্তু এসব দেখে শুনে ভালো করে ফলো করে ভক্তের ভক্তি উধাও হয়ে গেল ।
প্রথমে বেন জনসন বা শারাপোভার কথা বলেছিলাম । একজন প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত হয়ে অলিম্পিক পদক হারিয়ে আজীবন খেলা থেকে নির্বাসিত আর অপরজন শাস্ততির দোরগোড়ায় । কিন্তু এই প্রতারণার শাস্তি কি কিছু আছে ? আপনারাই ঠিক করুন কারণ আমি বা আপনারা বা আসরের এডমিন কেউই প্রতারণার বাইরে নয় ।।
এই মেলার অনেকেই আসরের এই প্রতারকের খুব প্রিয় ভক্ত । আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনারা যুক্তি দিয়ে আমার লেখাটা পড়ে বিবেচনা করে বলবেন ।