একদিকে যখন,

আজ এক ধূ ধূ ধূসর প্রান্তর পাশবিক উল্লাসে উৎসব মুখর,
গুটিকয়েক শ্বেতশুভ্র চাপাতি আর মিশমিশে কালাসনিকভ।
অজানা উপকূলে সারি সারি মিছিল দেখি কর্তিত নরমুন্ডর,
নরাসুররা মেতেছে পালনে আজ তাদের রক্তহোলির উৎসব।
নরবলির রক্তিম বাষ্পেআকাশ বাতাস চারিদিক ধূম্রাচ্ছন্ন,
মাঝখানে শায়িত শত দেব শিশুর শব, মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন।
মায়ের আঁখিও আজ ছলছল, বুকের হাহাকারে সব টাল মাটাল,
তবুও চর্চিত ঘৃনিত এই অত্যাচার সামাজিক মাধ্যমে হয় ভাইরাল।
তাদের জন্য হাহাকার শুনি, আমরাও বিদ্রোহ করি নীরবে পাছে,
মানব নিধন যজ্ঞ শেষে তাই ওরা বলে দেখলে হবে খরচা আছে।

অপরদিকে তখন,

উৎসবমুখর শিহরণ চারিদিকে, বিমোহিত দাঁড়িয়ে যত জনগণ
আয়োজন সম্পূর্ণ, জগতজননী তুমি থাকো শান্তিতে বিরাজমান,
তবুও উলুধ্বনি, কাঁসরনিনাদে কেন প্রমাদ গোনে আমার মায়ের মন।
ঢক্কানিনাদের বজ্রঘোষণা দেয় সকল রক্তিম চক্ষুতে ধূমায়িত শান ।  
আমাদের জন্যই নাকি আজ যত হুল্লোড়, আর এই মাতামাতির,
কিন্তু আমাদেরও যে আনন্দ অনাবিল, করে  তিড়িং বিড়িং মন,
আমার মায়েরও করে আঁখি ছলছল, ভয় তারও শুধু ওই চাপাতির।
বুকের মাঝে সে লুকিয়ে রাখে আমাদের - তার সব একরত্তি ধন।
কিসের জন্য এই আয়োজন ? একরাশ শূন্যতা আজ শুধু বুকের খাঁচে,
জাঁকজমকের নিধনযজ্ঞ শেষে এরাও বলে -দেখলে হবে খরচা আছে।

মা গো আমি এক ছাগ শিশু তাই কি নাই জীবনের কোনো দাম ?
এত হুল্লোর, এত আয়োজনে শুধুই কি তোমার উৎসর্গীকৃত নাম।
যখন মানব জীবন আক্রান্ত, ধর্ষিত, লুন্ঠিত তাদেরই স্বজাতির হাতে,
এরাই তখন ছেয়ে দেয় দেখি চারিদিক যত  শ্বেতশুভ্র পতাকাতে ।
জেনে রেখ, এরাও যে নরাসুর, বরং বেশী কিছু ওই উগ্রপন্থীদের থেকে,
কারণ এরা শুধু হত্যা করে আনন্দ পায় মাঝখানে তোমার নাম রেখে।
তোমার পূজার আন্তরিকতা, সব আজ ম্লান এদের দেখনদারির কাছে,
দেখবএ তোমার বিসর্জন শেষেও বলবে ওরা দেখলে হবে খরচা আছে।




*************************************

উপরের কবিতাটি আমি আসরের প্রিয় কবি শ্রীমতী রুমা ঢ্যাং কে উৎসর্গ করলাম । এই কবিতার থিমের বীজ তিনিই আমার মনে রোপণ করেছিলেন ।

আজ সময় এসেছে ভাবার আর কতদিন এরকম  দুমুখো সর্প নীতি নিয়ে চলব ।।

" ছাগলের মা (প্রতীকি) আর কতদিন সুখে থাকবে ? "

************************************