দাদা, এলিয়েন দেখেছেন কখনো,
দেখেন নি ? আমি ভাবলুম বুঝি সবাই দেখেছেন,
আর উড়ন্ত চাকতি ? না সেটাও না ?
তাহলে বোধহয় আমিই দেখেছি শুধু ।
হাতের কাছে ক্যামেরাটা থাকলে, আপনাদের দেখাতাম ...
ক্যামেরায় অর্বাচীনের সাথে আমি অর্বাচীন... বিশ্বখবর ।।
আসল কথা, পাপী মানুষেরা এসব নাকি দেখতে পায় না,
আমি বলছি না আপনারা সবাই পাপী,
শুধু বলছি আমিই একা পুণ্যবান,
অফুরন্ত আমার এই পূণ্যের ঝাঁপি।
রোজ সকালেই পুণ্যের যষ্টি নিয়ে বেরই, এলিয়েনের দেওয়া,
যেখানেই অন্যায়, মাথায় একটা হালকা টোকা, ব্যস...
ন্যায়ের ভোজবাজির কারসাজি শেষ,
কদিন খুব সুখেই ছিলাম, প্রত্যেককে একটা টোকা,
রণে, বনে, জলে, জঙ্গলে, পথে, ঘাটে, বাজারে, হাটে, পার্কে,
ঝোপে- ঝাড়ে... না এর বেশী আর এগুনো যাবে না,
বাবার পকেট কেটে ক্যামেরাটাও কিনে নিলাম...
অফুরান উদ্যমে বাড়ি ফেরা, এরপরে কে ?
কিছু বললেই বলতাম – চুপ !! ক্যামেরা চলছে !!
মুখে বিশ্বজয়ের হাসি, পেটে খিধে, তবু মুখে লাজ,
কারণ ক্যামেরা চলছে !!
কদিন ধরেই মাথায় ব্যথা, রক্ত বমি শুরু হয়ে গেল,
বেরোতে পারলাম না গত কয়েকদিন,
অন্যায়গুলোকে ঠাণ্ডা করতে পারলাম না,
মনের দুঃখে, ক্যামেরাটা চালালাম, এতদিনের সাহসিকতা
কিন্তু একি ব্যথাটা বাড়ছে কেন?
অপার বিস্ময়ে তাকানো ডিজিটাল স্ক্রীনের দিকে,
এলিয়েনের লাঠি মাথায় পড়ছে, জাদুর কারসাজি,
হা হা হা , চোপ রও সবাই !! ক্যামেরা চলছে !!
কিন্তু, বার বার একটাই লোক দেখায় কেন ?
জামাটা যেন চেনা চেনা মনে হচ্ছে না,
হ্যাঁ, আরে এত আমিই, সব লাঠির বাড়ি যা আমি মেরেছি, সবই
পড়েছে আমার মাথায়, বারে, বারে।
রণে, বনে, জলে, জঙ্গলে, পথে, ঘাটে, বাজারে, হাটে, পার্কে,
ঝোপে- ঝাড়ে...যেখানেই গেছি, সেখানেই বাড়ি খেয়েছি,
আর সবাই দন্তবিকশিত করে আছে,
কেন কেন কেন? আমি না পূণ্যবান ?
বন্ধ কর, বন্ধ কর, ক্যামেরাটা বন্ধ করো !!
আমি না ভার নিয়েছি, সবারই পাপ বিসর্জনের,
নাকি আমিই ঘোর পাপী, সবার পাপ আমায় গ্রাস করেছে,
আমি নীলকণ্ঠ ... নাকি আকণ্ঠ পান করলাম গরল,
আমি বিলীন হয়ে যাচ্ছি, চিৎকার করছি – বাঁচাও, বাঁচাও।
আর দূরে, ঐ দূরে দেখা যাচ্ছে উরন্ত চাকতি, পালাচ্ছে,
আয়নায় পরিষ্কার অন্তরের এলিয়েন বলে উঠল-
চুপ ! চুপ ! ঐ দেখ ক্যামেরা চলছে,
মাথায় আর এক বাড়ি বেশ জোরে, তারপর সব শান্ত,
এক ঠাণ্ডা ক্ষীণ স্বর দূর থেকে দূরান্তরে পাড়ি দিচ্ছে...
ক্যামেরায় অর্বাচীনের সাথে আমি অর্বাচীন.. বিশ্বখবর !!