শ্যামা আমার হৃদয়রানী, কোথায় তুমি ?
তোমার প্রেমঅনল তাপে পুড়ে পুড়ে মরি আমি।
তোমায় খুঁজে ফিরি নানা বাহানায়, নানা অছিলায়,
সকাল–সন্ধ্যা কাটে এখন আমার শুধু কবিতায়।
তুমি আমার প্রিয়ংবদা, খুঁজছি সোনা তোমায় তখন থেকে,
সিঁড়ির মুখের গলির ফ্রেমে চোখটা রেখে।
চোখ জ্বলছে ধোঁয়ায়, দাদা, ওগুলো কড়া করে পোড়ান,
আঁধো আলো সিঁড়ির নীচেই আছে আমার বিড়ির দোকান ।।
যদি দেখা দেয়, হে প্রভু আমায় দয়া করে,
দশটাকারই ভোগ চড়াবো এবারে মনে করে,
দশটা – আটটা, সময়ভর শুধু স্বপ্ন খোলা,
এর বাইরে বাসে ট্রামে সেই বাদুড় ঝোলা।
দেরী করো না প্রিয়া, তুমি সিঁড়ির মুখে এসো,
সময় বয়ে যায়, সিঁড়ির নীচে এসে মুক্তো ঝরিয়ে হাসো,
চোখ জ্বলছে ধোঁয়ায় আমার, জীবন ভরের স্লোগান।
তোমাদেরই সিঁড়ির নীচে আছে ছোট্ট আমার বিড়ির দোকান...।
শ্যামা, প্রিয়া, যে নামেই ডাকি না কেন, তুমি আমার কৃষ্ণকলি,
তোমার জন্যই রোজ রোজ আমি এই দোকান খুলি।
শুধু তোমার ওষ্ঠদ্বয়ের ওই মধুর হাসি,
বুক ধুকপুক, তাই পারি না আর বলতে তোমায় ভালোবাসি।
দেরী করো না প্রিয়ে, তাড়াতাড়ি সিঁড়ির মুখে এসো,
দোকান ভাড়াও বাড়বে বলে গেছে তোমার ঐ রাগী পিসো।
দোকান চালাই কম, বেশী তোমার ঘোরেই চলি,
বাবা-মায়ের স্বপ্ন নাকি সব দিচ্ছি জলাঞ্জলি।
সেদিন যখন ভালোবেসে হঠাৎ ডাকলে কাছে,
শিহরিত মনে, চোখ ঘুরিয়ে তাকাই শুধু আগে পাছে।
বুক ধুকপুক, যেন একশ পাগলা ঘোড়ার খুরের আওয়াজ,
অনেক কষ্টে দিলাম পাড়ি, পিছে ফেলে যত লাজ,
প্রেমপত্র আর খোঁপার লাল গোলাপ খুলে তুমি দিলে হাতে,
বললে, ভাইটি আমার কথা রাখো, প্রেমিক আমার অপেক্ষাতে ঐ যে দেখো।
যদি দিয়ে আসো এক্ষুনি এইগুলো তারে,
বদলে দোকানভাড়া কাল থেকেই তোমার কমতে পারে।
কৃষ্ণকলির প্রেমের জ্বালায় পুড়ল হৃদয়, আজ চোখ ছলছল,
মা বললে, ত্যাগই নাকি সত্যি ভালোবাসার আসল বল।
হাসিমুখেই নিলাম বেছে দোকানটিকে, রেখেছিলে তুমিও তোমার কথাটিকে,
চোখ জ্বলছে, তবু ভালোই বেশ বেঁচে আছি এই পৃথিবীতে।
ভালোবাসার চেয়ে অনেক বড় বেঁচে থাকা, এখন আমার স্লোগান
সাক্ষী থাকুক, ওই সিঁড়ির নীচের বিড়ির দোকান ।।