বাড়ীর কাজে রেখেছি ভৃত্য
সিদ্ধহস্ত তার,
সবকাজ করে নিপুণহস্তে
নামটি হরিহর তাহার।
একদা প্রভাতে এসেছিলো সে
অজানা পথিকের বেশে,
কিছুদিনেই সে করেছে আপন
সকলের সাথে গেছে মিশে।
যে কোন কাজে ভাক পরে
হরিহরের দিনভর,
সবদিক যতনে আগলে রাখে
বিশ্বস্ত ভৃত্য মোর ।
চন্ডীপাঠ থেকে জুতো সেলাই
সবার অজান্তে করে ফেলে
কর্মকুশলে হয়েছে প্রিয়
অপরিহার্য জীবনের গতিপথে।
বছরের শেষে পূজার ছুটি,
নিয়েছে যাবে দেশে বলে
কথা দিয়ে গেল আসবে ফিরে
বিজয়া দশমীর শেষে।
দিন কেটে যায় রাত বয়ে যায়
সে আর আসে না ফিরে,
মনের আশঙ্কা রেখে মেতেছি সবাই
পূজোর খুশীর দিনে।
দশমীর পর খোঁজ নিয়ে জানি
সে আর আসবে না ফিরে,
কালব্যাধিতে নিয়েছে জীবন
বিদায় নিয়েছে পরলোকধামে।
মনের বেদনায় তাকিয়ে দেখি
তার শেষ সম্বল টিনের বাস্কটাকে,
অজানা স্বপ্ন গচ্ছিত তাতে
হরিহর যা কিছু রেখে গেছে ।
খুলে দেখি এক মাটির ভাঁড়
আর আছে চিঠি লেখা পরে,
লেখা তাতে তার আদরের মেয়ে
কনকচাঁপার যৌতুক রাখা আছে।
চিঠি পড়াশেষে যাত্রা করি
অস্রুজল নিয়ে
শেষ দেখা করে আসবো ফিরে
ইচ্ছে তাই মনে।
গিয়ে দেখি তার আদরের মেয়ে
বাবার বুকে মাথা রেখে কাঁদে,
আমি বলি কনকচাঁপা তুমি
আমার কন্যা আজ এখন থেকে ।
শ্রাদ্ধের কাজ সমাপনে করে
কর্তব্য পালন করি,
অবশেষে পিতার দায়িত্ব শেষ
কন্যাদানের বিদায়ের অনুষ্ঠানে ।
আমি ফিরেছি মনের কোনায়
চিরশান্তি নিয়ে,
জেনেছি প্রিয় হরিহর মোর
বৈকুন্ঠধামে গেছে ।