মাথা তুলে চারিদিকে তাকিয়ে দেখি,
দীপ্র বৈভব ছড়িয়ে আছে সর্বত্র।
দিকে দিকে বিস্ময় জাগানো সব
জ্ঞানের সাধনা, বিজ্ঞানের আলোক।
অনিমেষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখি
সভ্যতার সৌধ, আর সৃষ্টির সাক্ষর।
প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, শিল্প আর বিনোদনে
আপ্লুত হয়ে আছে পৃথিবীর মানুষ।
পর্যটকের মত দেখি অনলস সৌন্দর্য।
বৈভবের আলোতে চোখ ঝলসে যায়,
অকস্মাৎ চোখ নামিয়ে নিচের দিকে তাকাই।
চমকিয়ে ভেঙ্গে পড়ে আমার সমস্ত সত্তা,
ভয়ঙ্কর ভুকম্পে যেমন করে ভাঙ্গে অট্টালিকা।
দেখি চতুর্দিকে মানুষের নানাবিধ হাহাকার,
মানুষ তো এখনও লড়ছে বাঁচার লড়াই।
একমুঠো খাবার আর জলের জন্য,
দেশ থেকে বিদেশে খোঁজে নিরাপদ আশ্রয়।
চারিদিকে চলছে এখনও বিরামহীন যুদ্ধ,
দেশে দেশে চলে অবিরাম গণহত্যা।
বাঁচার অধিকার আজ হারিয়েছে মানুষ
মনোহীন, নৃশংস, দুর্বৃত্তের উন্মত্ত উল্লাসে।
এই মনোমুগ্ধকর সভ্যতার অন্তরালে
এরকম আদিম বর্বরতা ? মূঢ়তা আঘাত হানে,
বিমূঢ় , বিহ্বল হয়ে বসে থাকি আনমনে,
সভ্যতা, সংস্কৃতি প্রতিবাদহীন শুধু দেখে যায়।
বিজ্ঞান, শিল্প, দর্শন সব বিলুপ্ত হয়ে যায়,
নিজেকে মনে হয় যেন এক প্রতারিত মানুষ।
নিজেরই ছায়া দেখে সরে দাঁড়াতে চাই,
শিয়াল, নেকড়েরা যেন সদম্ভে তেড়ে আসে।
ধূমায়িত অন্ধকারে আলোর কোন রেখা নেই,
মানুষের ইতিহাসে আজও কবন্ধের যুগ।