দেওয়ালে আটকানো ঘড়িটার কাঁটা বৃত্তাকারে ঘুরেই চলেছে –
টিক টিক টিক –
বন্ধ দরজা প্রশ্ন করে ঘড়িটাকে কি রে আর কত বাকী ?
বন্ধ কাচের জানালায় বাতাসের অগুনিত ধাক্কা ,
আসবাবের ওপর জমে থাকা ধুলোর স্তর যেন স্মৃতির চাদর গায়ে একলা সময় -
চুপচাপ রান্নাঘর , ফেনের ব্লেড , এমনকি বন্ধ মগ্যাজিনের পাতা
সবাইকে নিয়ে অপেক্ষায় বসে থাকে ফ্ল্যাট নম্বর সি -16
যেমন অপেক্ষায় আছে ওই দুই জন –
আজ তো শনিবার ,
সপ্তাহ শেষের একটা দিন ,
আজিই তো বন্ধ দরজার তালা খুলে ওরা ভেতরে আসবে নতুন বাতাস নিয়ে ,
আজই তো আলো জ্বলবে , গান গাইবে মেয়েটা গুনগুনিয়ে ,
আজই তো ফ্ল্যাটের জানলা খোলা থাকবে সারারাত , বাতাস আসবে যাবে ঝিরঝিরিয়ে -
রান্নার ঘরে কড়া খুন্তির আওয়াজ ,
ও ওদের খুনসুটির খুঁটিনাটি ,
আর খুব ভালোবাসার কথা ,আদরের কথা শুষে নেবে শুষ্ক হৃদয়ে, ইটের দেওয়ালও আছে কান পাতে ।
দুজনের ভালোবাসার স্পশ মেখে নেবে অগোছালো ধুলো মাখা বইয়ের স্তুপ , বিছানার চাদর ও ব্যাল্কনির রেলিং ধরে কফি মগ হাতে উষ্ন চুমুকে এক মুহুর্ত বেলা -
ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় ধরা দেবে মেয়েটার থুঁতনির আদুরে তিল ,
কখনোবা জল ভেজা খোলা পিঠের ওপর ছেলেটার উষ্ণ ঠোঁটের জল আলপনা -
খোলা চুলে চিরুনির আঁচড় ,বাহুবদ্ধ আলিঙ্গন –
টিপের পাতা, সুগন্ধি , সাজানো কাজল , আলমারিতে ভাজ করে রাখা শাড়ি সব্বাই আজ যে যার মত করে ব্যাস্ত হয়ে উঠবে –
এই তো একটা দিন-
সপ্তাহের এই একটা দিন ফ্ল্যাট নম্বর সি -16 , হোয়ে উঠবে ওদের স্বপ্নের সংসার –
আর সব দিন নিস্তব্ধ , নীরব শূন্যতা , স্মৃতির দেওয়ালে ধুলো মেখে বসে থাকা ,
আর কেউ বুঝুক বা না বুঝুক ওদের স্বপ্নের সংসারটাকে বুঝেছে ফ্ল্যাট নম্বর সি -16 ।