লিখতে বসেছিলাম এই ভেবে যে অনেক কথা বলার আছে।
কত কিছু ঘটে রোজদিনই। কত নতুন পুরনো, ছোট বড় বেঁচে থাকার গল্প।
ভেবেছিলাম আগের মতই সেই লম্বা একখান কথোপকথন হবে,
ঘন্টার পর ঘন্টা চলবে এক বিষয় থেকে আর এক বিষয়ে গল্প, তর্ক, ঝগড়া,
আর তারই মাঝখানে নিজের অজান্তেই ভালোলাগার ছোট্ট একটু হাসি।
তোমাকে বলার ছিল কীভাবে রোজ জানালার ধারে বসে পাহাড়ের কোলে সূর্যাস্ত দেখি,
কিভাবে আমার বাড়ির সামনের পাহাড়টা প্রতি মরসুমে রং বদলায়।
বা হয়তো কীভাবে আস্তে আস্তে দিন রাতের হিসাবটা ধীরে ধীরে বদলে যায়।
হয়তো আরো অনেক কিছু।

ছোট্ট ছোট্ট ঘাস ফুল আমার পা ছুঁয়ে যায়,
পড়তি রোদ এসে দুচোখে আলতো চুমু খেয়ে যায়,
আমি চোখ বন্ধ করি, তাদের প্রতিটা স্পর্শে তোমাকে অনুভব করার জন্য।
নাম না জানা পাখিরা গান শুনিয়ে যায়,
দখিনা বাতাস কানে কানে রোজ বলে যায়
'তোমার জন্য লিখতে পারি এক পৃথিবী'
আমি কান পাতার চেষ্টা করি, তাদের ধ্বনিতে ধ্বনিতে তোমাকে শোনার জন্য।

তুমি শুনবে না?

ব্যস্ততা?
জানি, বড্ড ব্যস্ততা আমাদের,
অক্টোপাশের মতো এই ব্যস্ততা আমাদের চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছে।
তোমার, আমার স্বপ্নের পাখা হয়ে এই ব্যস্ততাই আজ আমাদের মধ্যে তৃতীয় জন হয়ে দাঁড়িয়েছে
আমার সময় নেই বলার, তোমার সময় নেই শোনার। আমাদের মধ্যে কথা জমে জমে মরুভূমি হয়ে গেছে।

তবু আমরা কি একটা মরূদ্যান খোঁজার চেষ্টা করতে পারি না?

গত রবিবার লেকের ধারে বসেছিলাম, অনেকক্ষণ,
ছোট ছোট ঢেউ এসে আঙুলের ডগায় ছোঁয়াছুয়ি খেলছিল,
ঠিক যেমনটা আমরা খেলতাম ছোটবেলায়।
আস্তে আস্তে সন্ধ্যা নেমে এল, দূরে গির্জার ঢং ঢং শব্দ ভেসে এল।
আমি তাও বসেছিলাম।
ওই প্রত্যেক মূহুর্তের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা তোমায় শোনাব বলে।
পাহাড়ের রাস্তায় রাস্তায় আলো জ্বলে উঠল,
কোনো রূপকথার পরীর ছোঁয়ায় সমস্ত পাহাড়টা ঝলমল করে উঠল।
আমি তাও বসেছিলাম পাথরের তটে।
তোমাকে আজ সব জমে থাকা কথা প্রান খুলে লিখব বলে।
তোমাকে বলব বলে যে আজও
'তোমার জন্য লিখতে পারি এক পৃথিবী'

তুমি পড়বে না?