একটা মেয়েকে জোর করে তার বাড়ির লোক একটা ছেলের সাথে বিয়ে দিল,
সম্পর্ক শুধু এতটুকুই হল যে তারা এক ছাদের নীচে থাকতে শুরু করল।
ছেলেটাও কোনোদিন স্বামী হয়ে ওঠার চেষ্টা করেনি।
আর মেয়েটাও মানিয়ে নেওয়ার কথা স্বপ্নেও ভাবেনি।
বেশ চলছিল এভাবে।
এমনকি কেউ কারো বন্ধু হতেও আগ্রহ দেখায়নি।
রোজ সকালে মেয়েটা ঘুম থেকে উঠে ছেলেটাকে দেখত পাশের অন্য একটা খাটে শুয়ে আছে।
আবার রোজ রাতে চোখ বন্ধ করার আগেও ঐ একই মানুষকে দেখত।
কথা তেমন হত না। যে যার মত বেঁচে থাকত।
এর থেকেতো বেশি আপন রুমমেটরা হয়।
একদিন মাঝ রাতে হঠাৎ মেয়েটার ঘুম ভাঙল।
আকাশে এক ফালি মৃয়মান চাঁদ তখন অস্ত যাচ্ছে পশ্চিমে।
ছেলেটা দাড়িয়ে খোলা জানালার ধারে।
মেয়েটা কৌতুহল নিয়ে দাঁড়াল পাশে।
-'ঘুমায় নি? কী দেখছ?'
ছেলেটার চমক ভাঙল। সে বলল
-'অনেকক্ষণ ধরি দেখছি, চাঁদাটা আস্তে আস্তে আরো পশ্চিমে ঢলে যাচ্ছে, আর কিছুক্ষণ পর ঐ পাহাড়টার আড়ালে চলে গেলে আর দেখা যাবে না'
সে রাতে ওরা অনেকক্ষণ স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে প্রত্যেক সেকেন্ড চাঁদটাকে ধিরে ধিরে অদৃশ্য হতে দেখল একসাথে।
পরদিন সকালে ওদের বাবা মা'রা এলেন।
একবছর আগে তারা যে ভুল করেছিলেন এবার তা শুধরে নেয়ার পালা।
সঙ্গে এল তালাকনামা। বললেন দুজনে সই করে দাও।
এমন জোর করে সম্পর্কের কি দাম?
ওরা অনেকক্ষণ একে অপরের দিকে তাকাল।
ছেলেটা সই করে দিল।
মেয়েটার বাবা বলল
-'আমি খুব অন্যায় করেছিলাম। আমার বোঝা উচিত ছিল জোর করে কেউ সুখী হয় না। এখন থেকে তুই আজাদ'
মেয়েটা সই করতে পারে নি।
গত এক বছর যাকে সে দিবারাত্র চোখের সামনে দেখেছে,
যার এক এক দিনের বয়স বাড়ার, ছয় ঋতুর সব পরিবর্তন সে নিজের চোখে দেখেছে।
হঠাৎ কাল থেকে তাকে আর সে দেখবে না।
এটা ভেবেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিল মেয়েটা।
একে কি ভালোবাসা বলে?
একে কি প্রেম বলে?
তাহলে কী বলে?