এই চিঠিটা তোকে লিখছি,
তোর বাড়ির ঠিকানা অবশ্য আমি জানি।
কিন্তু আজ লিখছি তোর অজানা ঠিকানায়।
এক অবিশ্বাস্য বিশ্বাস নিয়ে যে
বোমেরাং এর মতন সেটা গোটা পৃথিবীর সহস্র ভুল ডাক বাক্সে
ঠোকর খেয়ে একদিন সকালে
ঠিক তোর দরজায় কড়া নাড়বে।
সেই দরজাটায়, যার চাবি তোর কাছেই আছে,
অথচ তুই কোনোদিন খুলিস নি।
কোনোদিন সেই বাড়ির ভেতরের দেওয়ালে সূর্য এসে হাত বুলিয়ে যায় নি।
কোনোদিন তোর আপন নিঃশ্বাসের আওয়াজ সেখানে শব্দ ভঙ্গ করেনি।
কোনোদিন যেখানে ভালোবাসা তার সব দেনা পাওনার হিসেব চুকিয়ে খালি হাতে এসে দাঁড়ায়নি।
এই চিঠিটা সেই বাড়ির ঠিকানায় লিখছি আমি।

অসময়ের মনখারাপ গুলো তো আর যত্ন করে লিখে রাখা হয় নি,
নাহলে এই শহরতলির রাস্তায় ভাঙা খানা খন্দে কাগজের নৌকা করে ভাসানোই যেত।
যোগাযোগের তো অভাব নেই।
চলতি স্ক্রিনে আঙুল নাচাতে জানলেই হল।
হাসি, কান্না, আদর আবদার সবই তো হাওয়ায় হাওয়ায়।
অথচ আমরা অনুভব করি না।
ঢাক পিটিয়ে ভালোবাসা ঘোষণা করি, অদৃশ্য জালে উড়িয়ে দিই চুম্বন।
অথচ ছুঁয়ে দেখি না।
তোর মন খারাপ হয় কেমন করে জানি না।
তোকে হাসলে কেমন দেখায়, তা'ও জানি না।
কয়েকটা চলতি ছবি আছে খালি, তারা সবার সব অনুভূতিতে সতত ধ্রুব।

তবু কিছু থাকে, যা দেখতে হয় না।
কিছু থাকে যা লক্ষ মাইল দুরে বসেও অনুভব করা যায়।
কিছু যা সবার থেকে সবাইকে আলাদা করে।
কি বলে তাকে?
মন?
আত্মা?

এই চিঠিটা তোর জন্য।
যে বাড়িটায় ভালোবাসা নামক মহান ব্যক্তিটি প্রকৃত নিঃস্বার্থে বিরাজ করেন,
যে বাড়িটায় প্রেম জাগতিক সুখের দাসত্ব থেকে মুক্ত।
যেখানে মানবিকতার বিচার কাগজের টুকরোয় হয় না,
সেই বাড়ির মালিকের ঠিকানায় লিখছি চিঠিটা।
এক অবিশ্বাস্য বিশ্বাস নিয়ে যে
বোমেরাং এর মতন সেটা গোটা পৃথিবীর সহস্র ভুল ডাক বাক্সে
ঠোকর খেয়ে একদিন সকালে
ঠিক তোর দরজায় কড়া নাড়বে।