কতদিন আকাশের চোখে চেয়ে দেখিনি,
আকাশের নীলে মন খারাপের চাদর
বিষণ্নতার মেঘ ছুঁয়েছে পাহাড়ের ঘরবাড়ি
কতদিন বাতাসের গন্ধ শুঁকিনি আমি
সিসার অকারণ ক্ষোভ জমেছে বুকে
বাতাসে আজ হতাশার বাড়াবাড়ি ।
কতদিন সোনারোদে গা ভেজাইনি
সোনার ঝালরে ঢাকা রোদ কেবলই পালিয়ে বেড়ায়
রোদেরও রংয়ে অতিকায় বড্ড বেগুনী লেপা
আকাশ-বাতাস-নদী-রোদ;
এসবের তৃষ্ণা বড্ড ক্লান্ত করে আমায়।
কতদিন মাটির সোঁদা গন্ধে খুঁজি না আমার ছেলেবেলা
মায়ের বুকে শিশু যেমন খোঁজে দুধেল গন্ধ ।
দূর আকাশের সীমান্তে দেখি না আকাশ-মাটির মিশে যাওয়া,
কতদিন আঁধারের রূপ দেখি না আমি,
রাতের গায়ে ফুটে থাকা নিখাদ আঁধারের বুকে মুখ ডুবিয়ে
কতদিন কথা হয়না;
বৃষ্টিতে ভিজি না কতকাল আমি,
বৃষ্টিও রোমাঞ্চ হারিয়ে কেবলই ঝরে পরিমিত প্রয়োজনে,
আদ্যপান্ত বেরসিক নাগরিক এই জীবনে।
এ মাটির শোঁদা গন্ধ নেই,
অসাড় এ মাটিতে উত্তাপ নেই,
স্নায়ুর অনুরণনে নেই শেকড়ের টান।
এখানে রাতের আকাশে তারার মেলা নেই
শীতের চাবুকে সন্ধ্যা নামে;
গুঁড়ো মরিচের ছুড়ি চালায় মৌন-নিথর-দীর্ঘ রাত,
তুষার বাতাসে শুভ্র ফুলের ফেনা;
তুলোর ভেলায় উড়ে উড়ে শ্বেত পাহাড়ের গায়ে মৃত্তিকারা হারায়,
বৃক্ষের কঙ্কালে থমকে যায় নিঃসঙ্গ নিঃশব্দ সময়,
ঋতুরা স্থবির; একে একে সময়ের পালক খসে।