একটা ভিখিরি ভিক্ষা করে ফিরছে
কাঁধে ভিক্ষার ঝুলি
আর হাতে একখানা ছোট ভিক্ষা পাত্র।
রাস্তায় আমাকে দেখে
দাঁড়িয়ে পড়ল মৌনভাবে, হাত বাড়িয়ে বলল-
"দুটো ভিক্ষা দাও"।
আমি মুখ বেঁকিয়ে তাকে কত কথা শোনালাম-
"পার না কাজ করতে
লজ্জা করে না ভিক্ষা চাইতে", আরো কত কিছু-
ভিখিরি চলে যায়
আমার কথার কোনো প্রতিক্রিয়া না করে।
বাড়ি ফিরে নিরালায় বসে ভাবি
ওর কি দোষ, দোষ আমাদের, সমাজের।
ওর গা সওয়া হয়ে গেছে
সমাজ পারে না ওর ভিক্ষাবৃত্তি দূর করতে
বরং অবজ্ঞা করছে প্রতিনিয়ত।
সমাজের এই চূড়ান্ত অবহেলার জালে পড়ে
ওরা হয়ে পড়ছে বিচ্ছিন্ন।
সমাজ দিতে পারে না ভালো কিছু
শুধু দেয় ঘৃণা আর অবহেলা।
তাই ওরা রয়ে যায় একই অবস্থাতে
পূর্বানুপুরুষক্রমে।
আমার মনে হয়, আমরাই দিতে পারি
ওদের নতুন জীবন
রক্ষা করতে পারি, তলিয়ে যাওয়া থেকে।
আগে ভাবতে হবে
ওরাও মানুষ, ওদেরও জীবন আছে
ওরাও পারে সফল হতে।
তাই আজ আমাদের শপথ নিতে হবে
ভিক্ষাবৃত্তি দূর করার।
দরকার ওদের মানসিকতার পরিবর্তন
আর হাতে দিতে হবে কাজ।
হঠাৎ করেই সেই ভিখিরির সাথে দেখা একদিন
আমার দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে
চলে যাচ্ছে হন্ হন্ করে, যেন কত ব্যস্ত। আমি আলতো করে ডাকি
ডাক শুনে দাঁড়িয়ে পড়ে, আমি বলি-
"তুমি ভিক্ষা করছ কেন?"
চলো আমার সাথে, তোমায় কাজ দেব
কিছুতেই রাজি হয় না সে।
বুঝলাম কাজ না করে করে
কাজ করার মানসিকতাই হারিয়ে ফেলেছে।
তবুও অনেক চেষ্টা করলাম বোঝাতে
পারলাম না কিছুতেই।
অবশেষে দেখি, সে দৌড় মেরে
নাগালের বাইরে চলে গেল।
বুঝলাম, ওদের এমন করুন অবস্থার জন্য
ওরাই সবচেয়ে বেশি দায়ী।
আমরা হয়ত কিছুটা সাহায্য করতে পারি
কিন্তু ওরা তা নেবে না
হয়ত রাগ, দুঃখ, ক্ষোভ আর অভিমানে।
তবুও চেষ্টা করা তো দরকার, তাই না
ঠিক বললাম কিনা তা বিচার করার দায়িত্ব
আমার, আপনার সবার।