*বৃদ্ধাশ্রম*

কালকেই সব ঠিকঠাক হয়ে গেলো,
ছাড়তে হবে আমার ঘর আমার বাড়ি,
যার এক একটা ইটে লেখা আছে আমার নাম,
আছে আমার কঠোর পরিশ্রম,
জানতাম না কপালে আমার আছে শেষে এই বৃদ্ধাশ্রম ।।

যাকে ছোট থেকে করলাম বড়,
সে এই সমাজে হলো মানুষ বলে গণ্য,
প্রতিদানে এটাই ছিল আমার প্রাপ্য,
বৃদ্ধাশ্রমই হলো আমার শেষ মাত্র গন্তব্য ।।

বউ টাও আমার খুব স্বার্থপর,
একলা ছেড়ে চলে গেলো।
শুধু স্মৃতি টুকুই ছিল তার এই বাড়িতে,
এবার যেতে হবে ছেড়ে তাঁর এই স্মৃতি,
যেতেই হবে বৃদ্ধাশ্রম এটাই মোর নিয়তি ।।

তাকিয়ে থাকি ছেলের মুখের দিকে,
তার সিদ্ধান্ত বদলানোর আশায়,
যদি ঘরের কোণে একটু জায়গা দেয়,
তবে থাকবো পড়ে, নাই বা দিলো খেতে, তাও কাজেতো আসবো সেবায়।
দেখনা, দেখনা বাবু, যাতে বৃদ্ধাশ্রম না যেতে হয় ।।

নাতি ও যেন কেমন ওর মা বাবার দলে,
আগে দৌড়ে আসতো আমায় দেখতে পেলে।
আজ রাগ তার,
ভেবেছে যাচ্ছি আমি ঘুরতে,
কি করে বোঝাই তোকে ,বাবা যে তোর ব্যস্ত আমায় তাড়াতে ।।

বুক ভারী করে শেষবারের মতো পড়লাম শুয়ে নিজের ঘরে,
কথা ছিল পড়বো উঠে পরের দিন প্রাতঃ কালে,
না হলো না ওঠা , হলো না ছেড়ে যেতে এই আশ্রম,
চার কাঁধে চড়ে গেলাম শ্মশান,
সব শেষ, সব শেষ ,
হলোনা যেতে আর আমায় সেই বৃদ্ধাশ্রম ।।