তুমি হাঁটছো জীবন বাবুর ট্রেনে
ঘ্রাণের ডগায়
অথবা
রকমারি বিরতির মধ্যে।
আমি হাঁটছি তোমার শরীরে—
কাঁপছি
কোহেকাফ নগরে
একা
একা।
রঙের শহরে
সাদাএপ্রোন জড়িয়ে আছে
আমার ফড়িঙ—
গাঢ় দুর্বায় সুগন্ধ্যা’র সন্ধ্যা বিক্রি করে
তার ঘাটে চলে যাবো।


ট্রাম ছেড়ে কীর্তনখোলা; ডাকছি
একহাতে রানাঘাট অন্য হাতে আড়িয়াল খাঁ।
দুই কাঁধে প্রকৃত রবিবারগুলো
সুই মুখে কথা বলছে;
সামনের স্রোত ভাসাচ্ছে আমার নাম
অন্য গ্রহের পাপালাপ—

ওই যে এপ্রোনগার্ল
তার চশমা
ওখানে ঢেউ জমা রেখেছি
ওইখানে ভূত পাঠাচ্ছেন জীবনবাবু!
এই কীর্তনখোলায় কোনো ট্রাম নেই;
একশ ট্রেন থেকে বিষ্যুদবার নামছে—
তুমি বরিশাল
তোমার গালে কলকাতা।

ওই যে বাঁশপাতা
ওখানে বিষ্যুৎবার ঘুমাচ্ছে
তার প্রতিটি অঙ্গে সপ্তাহের ভেঁপুরেখা
তুমি আরাম করো ট্রাম
তোমার গাঢ় চুম্বনে
দৃশ্যাহত হবো না আর—

কীর্তনখোলা
তুমি অসুখের পবিত্রতা নিয়ে খেলছো পৌষে
আসছে শীতে কলকাতা;
রানাঘাট থেকে মাঘ আসবে—
আমি বেলপাতার ঘ্রাণ জমা করছি;
তোমার ঠোঁটের মুগ্ধতা
ট্রামে উড়িয়ে দেবো।

কথা ছিল
আমার বাড়িতে জীবনবাবু এলে
তোমাকে ডাকবো
সমস্ত রবিবার নিয়ে তুমি গাইতে থাকবে
আমি শুনবো।
তুমি ইট থেকে জখম
মৃত্যু থেকে দুনিয়ার খড়ম নিয়ে আবার ছুটবে
ছুটতে ছুটতে বকদের রাজ্যে আবার দেখো হবে আমাদের।
কোনো সফেদ চোখ থেকে
গড়িয়ে পড়বে কীর্তনখোলা
আর ট্রামের খবর থেকে বেরিয়ে আসবেন
সতেজ জীবন বাবু...

তারপর খোলা বই থেকে তলিয়ে যাওয়া তোমাকে
আবার নতুন করে আবিষ্কার করতে থাকবো
পরম্পরার বৃত্তে উস্‌কে ওঠা বৈধতা
প্রসাদময় যাপনে
তাদের গতিবুক থেকে
জাগবে
তুমি ও তোমার একশত ষাট পৃষ্ঠার সাম্প্রতিক
আমাকে বেঁধে রাখা পঙ্ক্তিতে রহস্য
রিকশা থেকে ওজনদার ঔষধে আমি ।

জীবন বাবু জানে
মড়ক লাগলে
কোথায় রানাঘাট
কোথায় সুগন্ধা
আর কোথায় ধানসিড়ি—কারো ঘুম হয় না।
কেবল তোমার চুল
তোমার শাঁখ
তোমার খলবল
তোমার মধু বাহিত চোখের মতো উড়বে।
সেই বর্তমানে—সাধুর মাঠ
শকুনের ফুটপাত
সব ভলিউম থেকে বর্ধিত সংস্করণ বের হবে।

তুমি কলকাতায় গোপন
হতে
হতে
সমাবেশ হয়ে ওঠো;
নিষিদ্ধ ইস্তিহার পাঠ করো।
বোমারু বিদ্যার লোভ থেকে কান বাঁচিয়ে
শুনতে থাকো আসামি হারানো পোশাকের ব্যবহার।

আসছে শ্রাবণে কাতুকুতু খেলার হিংসা থেকে
বের হয়ে আসবো।
স্বৈর জন্মের খড়-কুটোয়
সয়লাব হয়ে যাবে মধ্যবিত্ত ফড়িঙ।
হ্যালো জীবন বাবু শুনছেন—
কাশিপুর থেকে একদল নাচ আসছে
বিবর্তনের ছন্দে শীতের একাকিত্ব নিয়ে
পালাচ্ছে কেউ;
তার পিছু পিছু ছুটছি আমি,
আমার স্বপ্নের এপ্রোন।
আপনার হোঁচটে বৃদ্ধ বৃক্ষের নেয়াশ দেখছি
ক্লান্ত হাসি থেকে ঝরে পড়ছে আরো অগণিত রবিবার—

আপনাকে আমি কিছু শুক্রবার ধার দিতে পারি
সামনের কোনো বিদায়ে পরিশোধ করে দিবেন
অথবা শোক শিক্ষার বিকেলগুলো দিয়ে আমাকেও
শিখিয়ে দিবেন মৃত্যু যাত্রার যৌথ ভ্রমণ।
আমি গলিত বছর থেকে ফুরানোপ্রায়
হুঁশগুলো চাষ করবো। সাদা এপ্রোনে
লিখে রাখবো বাতাস হত্যার প্রকৃত ইতিহাস।

জীবন বাবু আসেন
হাতে-পায়ে কীর্তনখোলা
চোখে-মুখে রানাঘাট
মাথা ভরতি এপ্রোন
হাসপাতাল থেকে আমরা চলে যাই;
সোনালি আঁশের ইতিহাস হাসতে থাকে
আর কলুই ক্ষেতের প্রজাপতি ডাকে আমাদের ।

পরবর্তী পয়নামায় ফাল্গুনের খামে মহাজনদের
পোস্ট করে দিবো। ছায়া যন্ত্রণা ভাবতে থাকবে
মুহূর্ত বিকানো জটিল গণিত।
আমি কাতরাতে কাতরাতে বলবো, ‘এইসব মঙ্গলবাণী
থেকে নিজেকে ছুটি দিলাম...’