গল্প আর কবিতা সাহিত্যেরই সন্তান। আর সাহিত্য হলো স্রষ্টার সৃজনশীলতার বাহক, সভ্যতা বিনির্মাণের সহায়ক। সাহিত্যসেবীরাই যুগে যুগে সভ্যতার অলংকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়। গল্প আর কবিতা সাহিত্যের সৃষ্টি শীলতাকে দু'টি ভিন্ন আঙ্গিকে প্রকাশ করে। তবে অনেকেরই ধারণা, গল্প বা কাব্য চর্চ্চার জন্য ব্যাকরণ জ্ঞান সম্পন্ন পান্ডিত্যের অধিকারী হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু আমি তা মনে করিনা। কারণ আমি আমার বাংলার শিক্ষকদের সাহিত্য সম্মেলনে জ্ঞান গর্ভ আলোচনা করতে দেখেছি, ব্যাকরণের চুলচেরা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করতে দেখেছি, সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করে পুরস্কার বিতড়ন করতে দেখেছি কিন্তু তাঁদের অধিকাংশকেই গল্প লিখন বা কবিতা রচনা করা থেকে নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান করতে দেখেছি, কারণ তাঁদের মধ্যে "পিছু লোকে কিছু বলে" জাতীয় সংশয় ও ভীরুতা কাজ করে। কিন্তু গল্প লেখা বা কাব্য চর্চ্চার জন্য সবচেয়ে বেশী যেটার প্রয়োজন তা হ'লো উপস্থাপনের দুঃসাহস। ভূল হবে, সমালোচনা হবে আর সেই ভূল ও সমালোচনা কে মন্থণ করেই বের করে আনতে হবে সাহিত্যের নির্মল রস বা নির্যাস।
গল্প বর্ণনা মূলক,কল্পনা প্রসূত বিষয় ভিত্তিক, বাস্তবতা বিবর্জিত নাটকীয়তাপূর্ণ খন্ডিত বিষয়ের উপস্থাপন আর কবিতা হ'লো আবেগ নির্ভর সৃষ্টি, যা উপস্থাপিত হয় সংক্ষিপ্ত আকারে। ইশারা বা ইঙ্গিতের চমকপ্রদ সহায়তায়। যে জন্য প্রয়োজন অপেক্ষাকৃত কোমল ও শ্রুতি মধুর শব্দ চয়ন, কাব্যিক ভাব সমৃদ্ধ হয়ে ছন্দময়। কেউ কেউ মনে করেন,প্রেম আর কবিতা সমার্থক কিন্তু আমি মনে করি কবিতাও সার্বিক বিষয় কে সংক্ষিপ্ত আকারে উপভোগ্য করার মাধ্যম হতে পারে। ভূল ভ্রান্তি মার্জনীয়।