হারিয়ে গেছে যে দিন
    
শীতের দিনে গন্ধ পেতাম আহা দারুন নলেন গুড়ের।
আজকে খুঁজে পাইনা সে তাল, বেল অথবা সেই খেজুরের।
মাঝে মাঝে গন্ধ পেতাম কারা বানায় সুগন্ধি ঘি?
আজকে মনে দীর্ঘশ্বাস – সেদিন কোথায় ফেলে এসেছি?
গ্রীষ্মকালে সারা দুপুর বুড়িপুকুরে মেতে ওঠা।
গরুর গাড়ির লপ্পা ধরে শুধুই পিছন পিছন ছোটা।
আমন ধানের কাটা নাড়ায় রক্ত বেরোয় ফাটা পায়ে।
পরোয়া নেই  যদিও কারও জামাকাপড় নেইকো গায়ে।  
রেষারেষি চলছে ধানের শিস কুড়োবে কে কতটা?
সন্ধ্যেবেলায় ছেলে ফেরেনা ভেবে একা মরছে যে মা!
জ্যৈষ্ঠ ঝড়ে, শিল-বাজ পড়ে আম কুড়োনোর তবু ও কী ধূম।
আমের লোভে,খাঁ-খাঁ দুপুর কিন্তু কারো নেই চোখে ঘুম।

সেদিন ফিরে আর পাবনা, হারিয়ে গেছে ছেলেবেলা।
আজকে কোন ছেলেকে দেখ পথে-ঘাটে করছে খেলা?
পুকুর,বাগান,সামনে নদী অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে।
চোখ নেই কারও সে ভাষা বোঝার, গাছপালা যে তাদেরই ডাকে।
আলট্রামডার্ন করতে হবে তাই তো মেয়ের হাতে ল্যাপটপ।
না দিলে নেট করবে কিসে? সেলফোন  তাই পায় ঝপঝপ।
পুচকে ছেলে,পুচকে মেয়ে কিন্তু মনে অগাধ যে সুখ।
একশ জনের ফ্রেন্ড্র রিকোয়েস্ট জুটিয়ে যে দেয় প্রিয় ফেসবুক।
রান্না করে সময় নষ্ট – কী দরকার? আছে ফাস্টফুড,
পসন্দ ছেলের। মা তাই ভাবে- ছেলে আমার ভেরি ভেরি গুড।
ছেলে একবার বিদেয় হলেই হোয়াটস অ্যাপ মার হাতের মুঠোয়।
ফরোয়ার্ড মা মেতে উঠে হাজার হাজার বন্ধু জুটোয়।
ভেরি বিজি হলেও কিন্তু, বাদ যায় না মোটেও বাবা।
হোয়াটস অ্যাপ না ইউজ করলে এখন ব্যাকডেটেড,বুদ্ধু,হাবা।

এত পেয়েও বুঝিনা ভাই সেদিন নাকি এদিন ভালো?
মনের কাল অন্ধকারেও সেদিন কেন জ্বালায় আলো?
সেদিন জীবন জুড়ে ছিল হাসি-খুশী আর মজার কণা।
আজকে আমরা সবাই কেন আস্ত রামগড়ুরের  ছানা!
---------