উদ্বাস্তু— শামস্ রুবেল
.
'আগুন জ্বলে উঠলে চারপাশ নিভে যেতে থাকে'
ভাবতে-ভাবতে কেটে গেল কয়েদীর একটা জীবন।
.
...তিনিই আমার বাবা—আমি তার অক্ষম সন্তান!
আমার বোনের নাম বেদনা—মা দুখিনী জোহরা,
খড়ির মতো ভাইয়ের হাড়গোড় উঠোন-ছাউনি
ভেসে গেছে আটানব্বই-এর বানে!
.
যৌবনে বাবা একটি ঘরের স্বপ্ন এঁকে গেছেন,
গেঁথে গেছেন তিনটি ইট—আমরা শুধু চতুর্থ
ইটের স্বপ্নই দেখে গেছি; দেখে গেছি মুঠো-
মুঠো শূন্যতা—বাতাস আমাদের বড় করে তুলেছে!
.
ছন্দ ছুটে গেলে কবিতা কখনো কখনো শ্রুতিমধুর
হয়ে ওঠে—মধুসূদন পড়ে এইটুকুন অভিজ্ঞতা
আমার—কিন্তু জীবন তো সবসময় ছন্দের মতো নয়;
রিদম নিয়েও চলেনা—জীবন মূলত এথেনার চাকা
লাগানো সেই বাড়ি—ঠেলতে ঠেলতে উধাও...
.
একটা ঘরের স্বপ্ন দেখতে-দেখতে বড় হয়েছি আমরা!
ভাতের মতো সাদা মেঘ দেখেতে-দেখতে বড় হয়েছি
আমরা—বাতাস আমাদের বড় করে তুলেছে!
==
.
থার্ড ওয়ার্ল্ড— শামস্ রুবেল
.
সিলভারিং করা কিশোরের গাল, হতে পারে মসৃণ
আয়না—যেখানে অসন্ন পৃথিবীর বিম্ব দেখা যেত পারে।
.
দাঁত ওঠেনা, নখ বাড়েনা, হাঁটুর গীটগুলো চালু হয়না,
কিন্তু, কচি ঘাসের মতো পশমেরা ঠিক জুটে যায়
গোপন চরে—ওরা সময়ের আগেই পৌঁছে যায় সময়ের কাছে!
.
আর মেয়েগুলোকে নেহায়েত মনে হয়—মহাভারতের
গান্ধারী; প্রস্তুত, শত পুত্রের মা হতে—রজঃস্বলার আগেই...
.
যে ছেলেটি এখন মার্কসবাদ পড়ে, ফ্রয়েডকে 'ইতর'
বলে গালি দেয়, ট্রাইকোডার নিয়ে কথা বলে,
মোমাসের মতো সবখানে খুঁত খুঁজে বেড়ায়—তাকে
দুধের শিশু বললে ছোট করা হবে।
_