হসপিটালের একটি নোংরা বেড।
শিশুটির সারারাত ঘুম নেই।
সারা রাত মায়ের যন্ত্রণার সাক্ষী সে।
বেডের ধারে বসে বসে শুনেছে মায়ের চীৎকার।
গভীর যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসা সে শব্দ।
শুনতে শুনতে ভোর হয়ে এসেছে,
মা’কে সে ডেকেছে অনেক বার।
কোনো সাড়া পাইনি সে।
গত রাতে কয়েক জন প্রতিবেশী দিয়ে গেছে মা’কে।
আগে পরে কেউ নেই,
ছিল শুধু এই শয্যাশায়ী মা।
সারাদিন নার্স দের ব্যস্ততা,
ডাক্তার দের যাওয়া আসা,
দীর্ঘ নিঃশ্বাসে ঘড়ির কাঁটা টিকটিক করে চলেছে।
স্যালাইনের পাইপ এখনো অস্থির বেগ।
ক্রমে আবার রাত ঘনিয়ে এলো।
হসপিটালের ব্যস্ততা ধিরে ধিরে লোপ পেল।
ধিরে বিস্তার করলো স্তব্ধতা।
দেওয়াল ঘড়িটির টিকটিক শব্দ আরো স্পষ্ট হল।
শিকার শেষ করে টিকটিকি দুবার ডেকে উঠলো দেওয়ালে।
ল্যাম্পপোস্ট গুলি গভির রাতের স্পষ্ট ছাপ রেখে চলেছে।
গেটের বাইরে এম্বুলেন্সের আর্তনাদ।
ক্ষণিক তন্দ্রা ভেঙে চমকে ওঠে শিশুটি।
এ শব্দ গত রাতে প্রথম শুনে ছিলো মায়ের সঙ্গে।
চোখ চলে যায় মায়ের দিকে।
দুচোখের কোনে চিকচিক করছে জল কনা,
শ্বাস প্রশ্বাস টা ধিরে ধিরে বাড়ছে।
মা’কে ঠেলা দিয়ে শিশুটি ডেকে উঠলো,
একবার , দুবার, তিনবার ও’মা মা।
দুচোখ বোজা নিরুত্তর মা,
ধিরে ধিরে শান্ত হয়ে এলো দেহ।
বন্ধ হলো প্রশ্বাস।
এখনো শিশুটি ডেকে চলেছে,
একবার, দুবার, তিনবার... ও’মা মা।