আহ্লাদীর আজ সুখের অভাব
ভাত কাপড় ও শিকেয় গেছে
চার ঠ্যাঙে বুড়া স্বর্গে বাতি
শখের ছেলে স্বার্থ বাছে
তার মাগী তো আরও বেশি
চেঁছে পুছে সম্পত্তি নিলে
কথায় কথায় যখন তখন
গতর নিয়ে কথা তোলে
অসুখ বিসুখ ,আপদ বিপদ
ঝনঝনানি ,কথার খোঁচা
ঠাকুর ঘরে শান্তি বৃথা
শঙ্খ ঘন্টা যতই বাজা
আহ্লাদীর ও বয়স হল
ভিমরতী ও ষোলয়ানা
বকর বকর সারাটি দিন
করলে সুরু আর থামেনা
সহ্য হয়না ,মরণ দশা
বিষ কিনবার নাইকো মুরোদ
তবু ও সে বাঁচতে চায়
কচি নাতির বুকের ভিতর
একদিন সেই চোখের মাণিক
যখন একটু বড় হল
সেও কেমন রাতারাতি
ভীষণ রকম বিগড়ে গেল
যখন তখন হাত পা ছুঁড়ে
দু - চার ঘা দেয় কষিয়ে
ওলাউঠো মরণ হয়না
অভিশাপ সে দেয় চেঁচিয়ে
বাপ-মা বলে ওরে বুড়ি
খাবি বসে ,আওয়াজ কম
বেগড়বাঁই করলে এবার
পাঠিয়ে দেবো বৃদ্ধাশ্রম
বাস্তু ভিটে ,নব বধূ
স্মৃতির পাতায় চোখ চলে যায়
সেই সোহাগীর ঠাকুর ঘরে
চোখের জলে বুক ভেসে যায়
একদিন এক অভিমানে
পোঁটলা পুঁটলি লয়ে সাথে
খুব সকালে হুড়কা খুলে
দেখতে চাইলো জগৎটাকে
এখান ওখান ঘুরে শেষে
ভীষণ রকম ক্লান্ত হলো
পরনের ওই মলিন শাড়ি
ক্রমশঃ শতছিন্ন হলো
পেটে ভীষণ ক্ষুধার টান
অজ্ঞান হয়ে পড়লো পথে
দেখতে পেয়ে রিকশাওয়ালা
নিয়ে গেলো তার সে রথে
রথ থামালো ,ঘড় ঘড়িয়ে
জলের ঝাপটায় ফিরলো জ্ঞান
বললো মাসি আজ থেকে তোর
সবার সাথে এই প্রাঙ্গনে স্থান
প্রাঙ্গন নয় বিশাল দেউল
এখানে বাস প্রাণের গোপাল
সেই অঙ্গনের পথের ধারে
গোপগোপীনি অনেক রাখাল
প্লাস্টিকের ঢাকনা ঘরে
হাতে দিল ভিক্ষার থালা
আহ্লাদীর আজ শেষ ভরসা
প্রাণের ঠাকুর উপরওয়ালা ।
---------------------------------------