মাগো, আজকে যখন সারা গ্রাম
মাঠ জুড়ে শুনতে এল আমার নাম,
তখনও তুই এলি না একবারটি
ঘরের কাজ এতই, পাসনি ছুটি তাই কি?
একবারটি যদি যেতিস, দেখতি তখন তুই
সবাই মিলে করল আশীষ, শুধু নেই তুই।
গ্রামের মোড়ল জড়িয়ে ধরে ,বলল আমায় এসে
'গ্রামের নাম করবে বড়ো', দিল ভালোবেসে।
প্রনাম করতে প্রধান মাস্টার সেও তো বলল
'বড়ো মানুষ হবেই তুমি, এই আশীষ করল।
সবাই যখন আমায় দেখে, আমি দেখি কই,
মনে মনে আমি ভাবি, বুঝি মা এল ওই।
সারা মাঠ চোখ ঘুরিয়ে দেখে হতাশ হলাম মনে
আমার মা তখনও সময় কাটায় রান্নাঘরে।
বাবা আমায় জড়িয়ে ধরে বলে,'আমার বেটা ওযে',
দিদি আমার অশ্রুজলে চুমু খেল শিরে।
আমায় তুই ভালোবাসিস নে, আমি নই কি তোর ছেলে?
একবার তুই কেন এলিনে সব কাজ ফেলে।
তখন থেকে দাড়িয়ে আছি, দেখ না তুই এসে,
কেমন সব পুরসকার দেছে, জড়িয়ে ধর ওরে।
এখনও তুই রান্না করিস, বলিস সময় নেই
একদিন কি সব ফেলে মনে হয় না খোকার সাথে রই।
যা, যা আজ আমি কব না তোর সাথে কথা
যতই তুই ডাকিস আমায়, খাব না ভাত মাখা।
সব শুনে মা মুচকি হেসে, কাছে আসে ছেলের
জড়িয়ে বলে, 'আমার ছেলে, সোনা মানিক ওরে।'
এই বলে পায়েস বাটি দিল ছেলের হাতে,
ছোটো খোকা, কি বুঝবে, মায়ের স্নেহ ওই পায়েস বাটিতে।