“ইডিয়ট, মিথ্যে কথা বলতে শেখো, সুখী হবে।
-সুখী হওয়ার জন্যে মিথ্যে কথা বলতে হবে?”

“জীবনে প্রতারিত হওয়াটাকেও ভালোবাসতে হবে।”

                    - কবি শ্রদ্ধেয় ভাস্কর চক্রবর্তী

    এমন আরও অজস্র অসাধারণ মৌলিক ভাবনার জনক বাংলা সাহিত্য জগতের এক উজ্জ্বল নাম কবি ভাস্কর চক্রবর্তী।

  হয়তো তেমন প্রচারিত নাম নয়, হয়তো তেমন করে সাধারণ্যে জনপ্রিয় নাম নয়, তবু, আকাশের কোলে ব্যতিক্রমী ভাস্বর এক জ্যোতিষ্কের নাম, কবি ভাস্কর চক্রবর্তী। যিনি নিজের  কবিতা সম্বন্ধে অকপটে স্বীকার করেছেন, “বাস্তবিক, আমি তো কবিতা লিখিইনি। গদ্যের সঙ্গে চলেছি। আমাদের ছেলেমেয়েদের কাছে কোনদিন যদি সে সব লেখা কবিতা মনে হয়-তার থেকে বড় পুরস্কার আমার আর কী হতে পারে?”  

   পার্থিব শরীর নিয়ে এই পৃথিবীতে থাকার সময়কাল ১৯৪৫-২০০৫। তবে বলা বাহুল্য তিনি যেমন ছিলেন, আছেন তেমনটাই, তাঁর অসামান্য কীর্তির মধ্য দিয়ে এবং থাকবেন আগামীকালেও। জন্ম কর্ম বসবাস এপার বাংলার বরানগর। পেশা শিক্ষকতা। তাঁর উল্লেখযোগ্য কবিতাগুলির মধ্যে শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা,  এসো, সুসংবাদ এসো, রাস্তায় আবার , আকাশ অংশত মেঘলা থাকবে,  ইত্যাদি। উল্লেখযোগ্য গদ্যগুলি হল প্রিয় সুব্রত, শয়নযান, বিবেকানন্দ, ইত্যাদি।

“কবিতা আর মানুষ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা, সে খুবই শক্ত ব্যাপার একটা। দিন এমনই এসেছে, পাশের বাড়ির লোকটা কীভাবে বেঁচে আছে আমরা জানি না, জানতেও চাই না। শুধু পৃথিবীর গুটিকয়েক কবি, যাদের আমরা অকাজের বলি তারাই, আমি একশোবার বলবো, এই অন্ধতা সরিয়ে, পৃথিবীকে প্রতিদিন আরো একটু সুন্দর করার কাজে মেতে আছেন। আমরা দেখেছি, দেশগুলো অনবরতই ভাগ হয়েছে, আর কবিরা সেইসব দেশ জোড়া দিতে দিতে চলেছেন...”(পাখি সব করে রব)    
    
  শ্রদ্ধা আপনা আপনি আসে না, ভালোবাসাও না। কিছু কিছু ভাবনা সমীহ আদায় করে নেয় সেই কথার  মৌলিকতার দাবীতে, আবেদনের নিবিড় প্রাবল্যে। তাঁর কথা এমন করে তাঁর আগে বা তাঁর পরে কে  এমন করে  বলতে পারলো!

  বড়ো ভালো লাগলো তাঁকে স্মরণ করতে পেরে। নিজেকে ভাগ্যবান মনে হল তাঁর কথাসাগরের কিছুটা আপনাদের সঙ্গে, আপনাদের মাঝে ভাগ করে নিতে পেরে।
ভালো থাকবেন সবাই।
আন্তরিক শুভকামনা জানিয়ে শেষ করলাম আজকের মতো।