কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল। বাংলা কবিতার পাতায় পরিচিত এক নাম।
তাঁকে নিয়েই সামান্য কিছু বলার উদ্দেশ্যে এই প্রতিবেদন।
নাগরিক সভ্যতা যতই থাবা বসাক আমাদের রোজকার জীবনে- প্রকৃতিকে যতই পাল্টানোর চেষ্টা হোক তবু, প্রকৃতির সন্তান প্রাকৃতিক কারণেই প্রকৃতির কোলে ফিরে ফিরে যাই আমরা। কখনো নিজেরা, কখনো বা কবির হাত ধরে।
এমনই এক কবিতার নাম “প্রকৃতির সন্তান”- কবি, শ্রদ্ধেয় অনিরুদ্ধ বুলবুল।
কখনো বা স্নেহে কখনো বা বঞ্চনায় বেড়ে ওঠে প্রকৃতির সন্তানেরা। তাই, নিজগুণেই তাদের গড়তে হয় ‘আপন অধিষ্ঠান’। সময় চঞ্চল আর বিধিও বোধহয় চঞ্চলমতি! জোনাকিকে যে নামেই ডাকি না কেন তার পেলব আলো “কোন কাজে আসে শুনি বল কি?” ‘মোহন মধুর সুরে’ আনন্দে মন উদ্বেল হয় আবার কখনো বা কষ্টে বিষণ্ণ। খরস্রোতা মজে না কখনো আর মরা নদীর বুকে চরা জাগে। সুখদুঃখ দুটি ভাই পাশাপাশি চলে। একটাকে না বুঝলে অপরকে বোঝা যায় না তাই।
‘দুরন্ত সারসের চঞ্চু, ‘সোনা ধান’ ‘মোহন মধুর সুর’ অনুভূতির তন্ত্রীতে এক স্বপ্নানুভুতি এনে দেয় – এনে দেয় এক মিঠে দৃশ্যকল্প।
প্রকৃতি আর জীবন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। কবি তাই ফিরে ফিরে আসেন প্রকৃতির কাছে প্রকৃতির হাত ধরে। তার কবিতায় ধরা পড়ে জীবনদর্শন। ছন্দ আর মাত্রায়, বিষয় আর শব্দের সুষম ব্যবহারে তাঁর কবিতা অন্য মাত্রা পায় সবসময়।
কবিতাটিতে সাধারণ কথা সাধারণভাবেই বলা হয়েছে। শব্দ ব্যবহারে কোথাও চড়া অনুভূতি স্পর্শ করেনি আর তাতেই কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছে অসাধারণ হয়ে।
কবি যেমন অনাবশ্যক গুরুগম্ভীর শব্দপ্রয়োগ করেন না তেমন আবার সবসময়ের আটপৌরে শব্দও প্রয়োগ করেন না পুরো কবিতাটি জুড়ে। তবে, তাঁর প্রতিটি কবিতায় কম প্রয়োগ হয় অথচ শ্রুতিমধুর সুন্দর শব্দের মিশেল থাকে সুষম মাত্রায়। আর তাই,বাংলা শব্দের ঝংকারটা অনুভূত হয় তাঁর কাব্যে বারবার। উদাহরণস্বরূপ, এই কবিতাটিতে ‘খদ্যোত’ শব্দটির প্রয়োগ একটা আলাদা মিষ্টতা এনে দিয়েছে।
মিষ্টি এই কবিতাটি সম্বন্ধে অনেকেই মতদান করেছেন- করবেন আরও অনেকে তাঁদের “অনুভূতির তন্ত্রী” দিয়ে।
তাই, আজ থাকুক-এই পর্যন্তই।
ধন্যবাদ।