আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু কোন কবিতা নয়। বরং মন্তব্য নিয়ে, মন্তব্যকে কেন্দ্র করে দু চার কথা বলার বাসনায়, এই আলোচনা।  

না। ঠিক বলা হল না। মন্তব্য তো একা আসতে পারে না।  মন্তব্য স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, কোনকালেই। সে তো কবিতাকে ঘিরেই, কবিতাকে আশ্রয় করেই।  

প্রিয় কবি জাহিদ হোসেন রনজু। আমাদের আসরের একজন অত্যন্ত উজ্জ্বল নাম। তাঁর একটি মন্তব্য  নিয়েই আজকের এই আলোচনা। মন্তব্যটি হলঃ-

“আমার ব্যর্থতা এতো বেশী যে কবিতাটি আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। সবাই বুঝে তারপর যে সকল মন্তব্য করেছেন তাতে মনে হচ্ছে কবিতাটি অসাধারণ হয়েছে। কিন্তু বিধাতা আমাকে যে বুঝার ক্ষমতা দিয়েছেন তাতে আর যাই হোক এমন দ্রৌপদী কবিতার ভাবের গভীরতায় যাওয়ার ক্ষমতা আমার হলো না।
এমন মন্তব্যে রাগ হলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তবে আবারও বলছি এই না বুঝার ব্যর্থতা কোনভাবেই কবি ও কবিতার নয়, সম্পূর্ণ আমার। তবুও বেশ কয়েকবার পড়লাম নিজের ব্যর্থতাটাকে কাটিয়ে উঠতে....কিন্তু যা হওয়ার তাই.... বুঝলাম সব সময় গোবরে পদ্মফুল ফোটে না। আমার দ্বারা হলো না।

অনেক শুভেচ্ছা রইল কবি। শ্রদ্ধা সতত।”

আর কবিতা- আসরের আর এক উজ্জ্বল কবি সুপর্ণা-র  নিশি ‘ডাকে’

যে কবির পাতায় তাঁর এমন মন্তব্য, তিনি এখনো তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান নি। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেল।  তাই, আমার মনে হল কিছু কথা বলা প্রয়োজন, এই প্রসঙ্গে।
  
একটা কবিতা পড়ে কেউ কিছু না বুঝতে পারেন, বা ভুল বুঝতেও পারেন, বা না বুঝে “দারুণ হয়েছে”    এমন মন্তব্যে পাশ কাটাতেও পারেন। সে স্বাধীনতা আছে সবার। তবে, মন্তব্যকারী কবি, না বুঝতে  পারার  এমন অপূর্ব মন্তব্যে, আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হল তিনি নিজেকে এক অসাধারণ অবস্থানে রেখেছেন। “দারুণ  বা  অসাধারণ” গোছের পাশ কাটানো মন্তব্য প্রদানের চেয়ে এমন মন্তব্য বড়ো বেশি ফলপ্রসূ-রচয়িতা কবির জন্যে এবং আপামর পাঠকদের জন্যে।  এমন  খোলামেলা ভাব আদান প্রদানেই রচয়িতা এবং পাঠক দুজনেরই উপকার হবে বলে আমার ব্যক্তিগত অভিমত।  

আমরা যে কাব্য রচনা করি তার প্রকৃত মূল্যায়ন হবে এমন বস্তুনিষ্ঠ মন্তব্যের মাধ্যমেই, কেবল। তাই, এমন মন্তব্য মোটেই সমালোচনা নয়।  এমন মন্তব্য, মোটেই পাঠকের না বুঝতে পারার অক্ষমতা প্রকাশ নয় বরং, এমন মন্তব্য  সত্যিই আশীর্বাদের মতো সফল এক অংশগ্রহণ- কবির জন্যে এবং পাঠকের জন্যেও-    

এবার কবিতাটি সম্বন্ধে কয়েকটি কথাঃ-  

প্রথমেই বলি কবিতাটি অত্যন্ত সুন্দর। তবে, একটু অস্পষ্ট এবং দুর্বোধ্য  মনে হয়েছে।  যদিও এটি একেবারেই ব্যক্তিগত মত। রচয়িতা কবি তাঁর বক্তব্য পেশ করতে পারেন বা নাও করতে পারেন। কারণ এটি একেবারেই তাঁর সম্পূর্ণ স্বাধীন এক্তিয়ার।  

ভাবনাটিঃ-  

কষা ছক সফল করে কয়েকজন ফেরারি আসামী বা চোর মূল্যবান রত্ন সমেত পান্থশালায়।  আর  সেখানে, দুর্ভাগ্যবশত পথিক থেমে এক অসহায় অবস্থায়। চৌকিদার ডেকে যাচ্ছে গৃহস্থকে সাবধানবাণী জানিয়ে। তার আগে  সাঁঝের বেলায় নিকোনো উঠোন সমেত এক কৃষক পরিবারের বর্ণনা।  কাকতাড়ুয়ার জামার নীচে বোধ হয় চোর লুকিয়ে ছিল।  “শীতল নিঃশ্বাসে বিজয়ী ইঙ্গিত”  বোধ  হয় সেটারই ইঙ্গিত বহনকারী।  

ভালো থাকবেন রচয়িতা কবি। ভালো থাকবেন প্রিয় মন্তব্যকারী কবি।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই উভয় প্রিয়জনকে।