এতদিন জানতুম, নদী আমাদের পালনকর্তার ভূমিকায়।

জলের যে প্রবল ধারাটি বিক্রমপুর ভেদ করে মেঘনার দিকে ধাবিত হয়েছে, যে কিনা একটি আস্ত নদী, কালীগঙ্গাকে গিলে খেয়েছে। শুধু, তাই নয়,সেই প্রবল পরাক্রমশালী,তার খাওয়ার তালিকায় শত শত গরীবের কুঁড়ে ঘরকেও রেখেছে। আবার, সে রেখেছে, রাজা রাজবল্লভের মতো রাজা উজিরের মহার্ঘ সব স্থাপত্যকীর্তি। সে, নদীর নাম কীর্তিনাশা হবে না তো আর কি হবে!

কবি যেন এক রন্ধন শিল্পী। হাতের কাছে যা যা উপাদান পান, তাই দিয়ে তৈরি করেন সুস্বাদু আহার্য।

প্রেক্ষিত বলি বা,প্রেক্ষাপট, গতকাল একে একে বাংলা কবিতা ডটকমের সতীর্থ কবিগণ শোনালেন তাঁদের সেই উপাদান সংগ্রহের ইতিবৃত্ত।

তা সে কখনও, ইতিহাস,কখনও বা নিজের ঘরের একান্ত,উঠোন। কখনও বা, সমাজের অন্ধকার কোনো এক অবিচার, কখনও বা,ট্রেন সফরে হঠাৎ করে দেখা,এক কিশোরীর হাতের উল্কিতে উল্লিখিত 'রাই'-শব্দটি।

কখনও বা মহাভারত এসেছে। কখনও বা, মৃত্যু পথযাত্রী 'মা'। যেতে যেতে মা বলেছিলেন, "ফিরে আসবেন, তিনি"। কিন্তু আসেননি,আর। মা'র প্রতি সেই অভিমান যখন কবিতা হয়ে নেমে এলো, মা এলেন, মেয়ের সঙ্গে দেখা দিতে, স্বপ্নসন্ধানী পথে-

কিন্তু, কবি তো নিছকই এক সাধারণ,সাদামাটা রন্ধন শিল্পী নন। তাই, উপাদান ছাড়াও তাঁর প্রস্তুতি সেরেছেন, নিজের মনের অন্দরমহলে। শুধু, তাই নয়, যে উপাদানটি,যেমনটি এসেছিল, কবিতায়, তাকে, দুমড়ে মুচড়ে অন্য আরেকটা তৈরি করে, উপস্থাপন করেছেন।

চারদিকে যখন তাকাই,তখন দেখি, ভাঙনের সুর।
আর, গতকাল দেখলাম, মিলিত মিলনায়তনের যৌথ পরিবার।

একটা গোটা দিন পার হয়ে গেছে। কিন্তু, ভালোলাগাটা রয়ে গেছে, সেই একই জায়গায়,একইরকম-