ঠনঠনে মাঠে পচাশামুক
গোলাম রহমান
আবেগের সেই ভাব, যেখানে আকাশের তারাদের সঙ্গে আমার সখ্যতার ভাব ফুটে ওঠে। খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে তাদের বড়ো কাছের, বড়ো আপন বলে মনে হয়। তবু, বাস্তববোধে তারা তো এক অলীক...আকাশকুসুম! বাস্তবের সঙ্গে কোন যোগ নেই তার। এমন কথায় কোন দুঃখ-যন্ত্রণা থাকার কথা নয়। যেটা যন্ত্রণার, তা হল বাস্তবের তারাদের খুঁজে পাই না আর। কাছে পাই না, পাশে পাই না তারাদের মতো কোন সাথী, কোন বন্ধু।
আবার, আবেগের সেই একইরকম ভাব, নিজেকে আধার করে এক বটচারাকে বড়ো করে তোলার কল্যাণকর এক ইচ্ছা। যে গাছের নীচে কৃষক তার ক্লান্তি দূর করবে! রাখাল তার বাঁশিতে মধুর সুর তুলবে! পাখিরা গান গাইবে! গাছের ফলে তাদের খিদে মেটাবে! পাতার আড়ালে তাদের বাসস্থান ফিরে পাবে! এটা তো তেমন অবাস্তব নয়! চাইলেই তো এটা করা যায়, অনায়াসে! কিন্তু এটাই যন্ত্রণার সেই জায়গা, যেখানে এটুকুরও বড়ো অমিল। ঠনঠন করছে চারধার। সামান্য একটা বটগাছেরও মাটির পরে বড়ো হওয়ার জায়গা আর অবশিষ্ট রাখিনি আমরা!
আসলে জগতের কল্যাণকর কোন কাজেই আর নিজেকে সামিল করতে পারি না আর! না! স্বপনের অবাস্তবেও না! কারণ বাস্তববোধ আমার সদা জাগ্রত। শুধু অন্যমনস্ক কোন পথ চলতির পা ফালা ফালা করার দুষ্ট ইচ্ছা নিয়ে পচাশামুকের মতো আমার নিশ্চল নিশ্চুপ পড়ে থাকা!
এ বড়ো কঠিন দুঃসময়! স্বপ্ন দেখতে হলেও বাস্তব কিছুটা অনুকূল হতে হয়। একেবারে আকাশকুসুম বা অবাস্তব কিছু কল্পনাতেও আসে না। এক গভীর যন্ত্রণা থেকেই এমন কথার উৎপত্তি। এ এমন এক দুঃসময় যেখানে স্বপ্ন দেখার অবকাশটুকু পায় না মন।
আর তাইতো, অবশেষে নিজেকে পচাশামুক বলে মনে হয়। চোখের কোলে সে স্বপ্ন শুধু ঠনঠনে হয়েই থাকে। মাটির পরে সবুজ ক্যানভাসের ছবি শুধু কথার কথা হয়েই পড়ে থাকে। আকাশের ভাবনায় মাটির জন্যে কোন অনাবিল আনন্দের আয়োজন সারা হয় না আর!
অনন্য ভাবনাটি আসরের প্রতিশ্রুতিবান কবি গোলাম রহমানের। কবিতার নাম “ঠনঠনে মাঠে পচাশামুক” ।
অসাধারণ, ব্যতিক্রমী এক উপস্থাপনায় বড়ো ভালো লাগলো। একেবারে কথকতার স্বরে কবি বলে চললেন মনের কথাগুলি। মনের খেদ উঠে এল প্রতিটি স্তবকে স্তবকে।
প্রিয় কবিকে জানাই এক আকাশ শুভ কামনা। ভালো থাকুন কবি। আন্তরিক অভিনন্দন রইল এমন এক বিরল ভাবনা উপহার দেওয়ার জন্য।