পরাবাস্তব
কবি- শ্রদ্ধেয় স্বপন কুমার দাস

   একটা বড়ো ক্যানভাস, আকাশের মতো। এলোমেলো তুলির আঁচড়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রঙ। বাস্তবতার নিরিখে অসম্পূর্ণ মনে হয়! তবু যেন ছবিটায় ধরা পড়েছে সুচিন্তিত ভাবনার সোনালী ফসল।  

     এ এক বড়ো অদ্ভুত সময়। প্রতি মুহূর্ত মুখরিত, ক্রমবর্ধমান জন্মের কোলাহলে। তবু, ব্যক্তি মানুষ আজ বড়ো একাকী। বড়ো নীরব সে। একা একা ক্লান্তিকর সুদীর্ঘ সময় যাপন, শুধু শুধু ।  

   এ থেকে পরিত্রাণের কোন পথ নেই। আছে শুধু দ্বন্দ্বে দীর্ণ, চেতনায় দ্বিখণ্ডিত এক একক...  

                     “হেঁটে যাও দ্বন্ধমুখর রাস্তার কিনারা...”  

   অথচ পাশাপাশি বয়ে চলে চলমান স্বচ্ছ নিশ্চিত এক গন্তব্য-

                      “পাহাড়ি নদীর পাশাপাশি”  

   বাস্তববোধ আমাদের শিখিয়েছে শরীর আলোকিত হয়, অন্য কোন আলোকের সংস্পর্শে। কিন্তু এখানে,

            “এ শরীর স্বেদ থেকে ঠিকরে পড়ুক কিছু আলো
             যে আলোয় সারিবদ্ধ দেখি অনন্ত বুভুক্ষা।”  

             ঘামে ভেজা শরীর সত্যিই তো আলো বিকিরণ করে।  তবু, অগণিত কঠোর শ্রম নিজের পেটটুকুও ভরাতে ব্যর্থ!

   প্রকৃত জ্ঞানের আলো না পেয়ে যারা ভুল করেছিল, যারা বাঁচার সঠিক পথ হারিয়েছিল, তাদের কাছে তুমিই আদর্শ, তুমিই দিশারী-  

                  “অজস্র ভূগোল ভুলে যারা পথ হারিয়েছিলো
                  তাদের সামনে তুমি এখনো বিস্তীর্ণ নদী।”

    চেনা পথের সন্ধান পেলেও  আজ আমরা সবাই একাকী। আমার পাশে কেবলমাত্র আমি। আর  কেউ  নেই। ভালোবাসাহীন, মায়া-মমতাহীন পৃথিবী আজ শুধুই  স্বার্থকেন্দ্রিক। এতটুকু দরদ নেই অন্যের জন্যে। ঘন অন্ধকারে পাশে থাকা মানুষটিকে আমার মতো মানুষ নয়, অশরীরী মনে হয়!

     যদি কখনো আবার, পৃথিবীর মানুষের অবচেতন মন, অন্যকে ভালোবাসা দিয়ে সিক্ত করে তবে,

             “এ পৃথিবী কঠোর থেকে কোমল হলে
       একদিন কেউ তোমাকেই শোনাবে তোমার পরাবাস্তব কাহিনী।”

    আজকের হৃদয়হীন বাস্তবের কাহিনী তুলির আঁচড়ে তুলে ধরেছেন শ্রদ্ধেয় কবি স্বপন কুমার দাস, তাঁর “পরাবাস্তব” কবিতায়।

বিষয়টি বেশ কঠিন হওয়ায় বুঝতে বেগ পেতে হয় অবশ্য। তবে অসামান্য সুন্দর কবিতাটির ভালোলাগা কমে না তাতে এতটুকুও।  

   প্রতিবেদক চেষ্টা করেছে খানিক। কিন্তু ভাব সম্প্রসারণ অধরা রয়ে গেল অনেক। আসলে বাস্তবকে তবু কিছুটা ধরা যায়, ছোঁয়া যায়। কিন্তু, পরাবাস্তব রয়ে যায় অবচেতনে। হৃদয়ের অনুভবে হয়তো খুঁজে পাওয়া  যায় তাকে।

শ্রদ্ধেয় কবিকে আন্তরিক শ্রদ্ধা জানিয়ে শেষ করলাম আজকের মতো।

পুনশ্চঃ শ্রদ্ধেয় কবি,  দয়া করে “মহজ” শব্দে একটু আলোকপাত করবেন। অনেক চেষ্টা করেও অর্থ  উদ্ধার করতে পারলাম না।  

ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয়।
প্রিয় কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা।