অন্ধ বিবেক কাঁদে
প্রিয় কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল
আমাদের সবার অত্যন্ত প্রিয়, শ্রদ্ধেয় কবির যেমন কবিতা আমরা দেখে এসেছি, আজকের কবিতাটি তা থেকে একেবারে স্বতন্ত্র।
একজন চক্ষুহীনের কাঁদা কেমন যেন অস্বাভাবিক মনে হয়। কবিতাটির নামকরণ তাই, এক গভীর দ্যোতনা তৈরি করে মনে।
তবে,মনোরম কবিতাটি পাঠ করলে বোঝা যায়, কতটা নিবিড় ভাবনার ফসল আছে এমন নামকরণে।
আজকের দিনে বিবেক সত্যিই অন্ধ। সে দেখতে পায়না কিছুই। শুধু বুঝে নিতে চায় নিজের চাওয়া পাওয়া নিক্তির হিসেব। এতটুকু এধার ওধার হলেই কাউকে সে ছেড়ে কথা বলে না। চারিদিকে শুধু 'আমি'র সশব্দ আস্ফালন। সমাজে-সংসারে সর্বত্র তাই, এত অসহনীয়তার বাতাবরণ-
"আমি'র আমিত্ব নিয়ে জীবনের
যত হিসাব নিকাশ
মিলিয়ে কি পাই সব কিছু তার?
করে যাই- হা-হুতাশ।"
কিন্তু, যতই হিসাব করো নিশিদিন, সময় কিন্তু গড়িয়ে চলেছে আপন পথ ধরেই। সে থেমে থাকেনা কোনদিনই।
‘কি পেলে আর কি হারালে’- তাতে সময়ের কিচ্ছু এসে যায় না।
বিবেকের কাছে একটাই প্রশ্ন, "কি রেখে গেলাম আগামীর জন্য?"
সভ্যতার নাম করে নিজেরই গড়া পৃথিবীটাকে বসবাসের অযোগ্য করে চলেছি নিরন্তর।
কি জবাব দেবো ভবিষ্যতের কাছে?
বর্তমান সময় দোদুল্যমানতার। তাই, এ সময়ে স্থিত হতে পারছে না কেউ, কোন এক নির্দিষ্ট বিষয়ে। সবসময়েই এক অস্থিরতায় ভুগে চলা।
প্রতিবন্ধকতায় ভোগা শুধু বিবেক নয়; "ভাবনার ঘোড়া ক্রমশই খোঁড়া হয়ে যাচ্ছে!"
কবি সমাপন করলেন অসাধারণ-
"কাল-অকালের সীমারেখা টেনে
অন্ধ বিবেক কাঁদে অকাল সাঁঝে।"
বড়ো গভীর এক ভাবনার বীজ প্রোথিত করে গেলেন কবি।
অসময় যেন হাহাকার করে চলেছে এক ঘোর দুঃসময়ে।
আবারও বলি, কবির কবিতাটি ছোট্ট হলেও সমসাময়িক সময়ের প্রকৃত ছবিটি ধরা পড়েছে, তাঁর অনন্য সুন্দর লিখনশৈলিতে।
ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয়
এমন একটি কবিতা আসরে উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।