ঘ্যানঘ্যানে
-কবি অনন্ত গোস্বামী
মূলের স্বাভাবিক আবাস মাটির নিচের সূর্যালোকবিহীন অন্ধকার। সে মোটেই আলোর তীব্রতা সহ্য করতে পারে না।তবে, জীবন বড়ো রহস্যময়। বেঁচে থাকতে চাওয়া যে বড়ো দায়! আর তাই, বাঁচার প্রয়োজনেই স্বাভাবিক আবাস ছেড়ে মূলকেও বেরিয়ে আসতে হয়, সূর্যালোকের তীব্র দহনেই!
ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের বাসভূমি লবণাক্ত বাদাভুমি। শ্বাসবায়ুর স্বল্পতায় তাই তাকে উঠে আসতে হয় মাটি ফুঁড়েই...
এ খবর অজানা নয় আপনাদের।
তবু, এমন প্রসঙ্গই তুলতে হলো কবি অনন্ত গোস্বামীর কবিতা “ঘ্যানঘ্যানে”-র সুবাদে-
কবিতার বিষয়টি ভারি অদ্ভুত। অভুতপূর্ব এক নতুন কাব্য কথায়, কবি শোনালেন এক নতুন অনুভব। প্রিয়া/ প্রিয় চলে যাবে হয়তো। তবে, চিরাচরিত ঘ্যানঘ্যানে ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে, কবি আটকাতে চান নি প্রেমিক/ প্রেমিকাকে! তবে, এক নতুন বার্তার কথা শুনিয়েছেন সেই বিদায়বেলায়-
“যদি চলে যাবে রেখে যেও জমে থাকা ক্ষোভ।
না হয় শ্রুতিমধুর হবে না;
দ্বিধা কেটে যাবে, শ্বাস নিতে হব আমি অরণ্যে ম্যানগ্রোভ।”
আমি জানি, তুমি ছাড়া আমার শ্বাসযন্ত্র আর থাকবে না তার স্বাভাবিক আবাসস্থলে। সে বেরিয়ে আসবে বুকের খাঁচা ছেড়ে... ম্যানগ্রোভের মতো!
চলে যাবার সময়, অপমান করে চলে যেও। তবু,স্মৃতিপটে তুমি রয়ে যাবে চিরকাল। মিথ্যে স্বপ্নের খোঁজে ফেরা অশান্ত হৃদয় হয়তো একটু শান্তির খোঁজ পাবে, তাতে।
শুধু চুপিসাড়ে, না বলে চলে যেও না, দোহাই। তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন জোর খাটানোর ইচ্ছা আমার নেই কোনকালেই । শুধু, যাবার বেলায় এটুকুই জেনে যাও, ঘ্যানঘ্যানে আমিই ভালোবাসি তোমায়। বিশ্বাস করো, সত্যিই আমিই তোমার প্রকৃত বন্ধু।
এক প্রকৃত ভালোবাসার সন্ধান দিলেন কবি। গভীর বিরহে চিরাচরিত বিরহ বেদনা নয়! এক নতুন সান্ত্বনার খোঁজ পেলাম প্রিয় কবির কাছ থেকে।
বড়ো ভালো লাগলো এমন এক অনন্য অনুভব।
আন্তরিক অভিনন্দন জানাই প্রিয় কবিকে, এমন এক মনোরম কাব্য কথার উপস্থাপনায়।
ভালো থাকুন কবি।
আন্তরিক শুভকামনা রইল।