চকমকি পাথরের ঘষায় আগুন জ্বলে। সব পাথরে তো জ্বলে না। তবে, উত্তাপ তৈরি হয় একটা। একটা ক্ষয়, একটা ফুলকি কখন যে আগুন ছড়ায়, কে জানে!
জীবনের দুটো অবস্থা গতি আর স্থিতি। গতিই জীবন আর তাই ঘর্ষণ ফিরে ফিরে আসে জীবনের চলার পথে তাপে, উত্তাপে। নয়তো জড়ভরতের শীতলতায়, শ্যাওলায় জীবন দাঁড়িয়ে থাকে, থমকে...
আসরের নিয়মিত এবং অন্যতম প্রিয় কবি রীনা বিশ্বাস (হাসি) (মৈত্রেয়ী কবি) তাঁর অনন্য কবিতা “ঘর্ষণে ঘর্ষণে...” কবিতায়, শুনিয়েছেন এক নতুন কথা।
প্রকৃতির চিরন্তন ঘটনায় প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি জীবনের চলমানতা। প্রকৃতির ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জলকণায় ঘটে চলেছে ঘর্ষণ, অবিরাম। আর তার দহনে সৃষ্ট, মেঘ-বিদ্যুৎ-বৃষ্টি। এটা মোটামুটি আমাদের সবার জানা। তবে যেটা অজানা, তা হল মানব মনের ঘর্ষণে ভালোবাসার সঞ্চার হওয়া...
“দুটি মনে ঘর্ষণ লেগে
হয় একটি ভালোবাসা”
আর কে না জানে, ভালোবাসার সঞ্চারেই তো ঘর বাঁধা...
“দুটি ইচ্ছার ঘর্ষণে আসে
ঘর বাঁধার নব আশা”
দুটি মন, দুটি শরীর বাঁধা পড়ে। পৃথিবীর বুকে নিয়ে আসে তারা, নতুন জীবনের ধারা...
“নবজাতকের রুপ-রস-গন্ধ-
মধু ভরা ধরণীতে আসা।”
কবির কবিতাটি কলেবরে ছোট। তবে, কথা বলার ধরণ চমতকার। অনায়াসে বিচরণ করেছেন প্রকৃতি থেকে বাস্তবে। শুধু প্রকৃতির রূপ বর্ণনায় থেমে থাকা নয়, আমাদের জীবনের সঙ্গে তার মিলটাও দেখিয়েছেন সুন্দর। মাটির বুকে ঝরে পড়া বৃষ্টি ধারার জন্মকাহিনীর মতো জীবনের জন্মকথা শোনালেন তিনি অনবদ্য।
কবিতাটির নামকরণেও নতুনত্বের স্বাদ, “ঘর্ষণে ঘর্ষণে...” চিরন্তন প্রবহমানতার উদাহরণ বোঝাতে অসাধারণ, অপূর্ব।
এমন একটি সুন্দর কবিতাটির জন্য প্রিয় কবিকে জানাই আন্তরিক ভালোবাসা ও অভিনন্দন।
ভালো থাকবেন প্রিয় কবি।
আন্তরিক শুভকামনা।