কবিতার নামঃ- মুক্তি ও ভালোবাসা।
কবিঃ- প্রিয় সাবলীল মনির।
আজ আর কবিতা নয় একটা গল্প বলি। একেবারে ছোট্ট।
আমার ছেলে চারটে পাখি পুষেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর পাখিটা স্বপ্ন দেখতো এক খণ্ড আকাশের। যদিও তার জন্যে পেট ভরে খাবারের ব্যবস্থা, জল, আলো, বাতাস দিয়েছি। তবুও সে চিলেকোঠার খোলা জানালা দিয়ে উড়ে গিয়েছিল ঘাসফুল ও নদীর কাছে। আমার ছেলে তাতে বেশি আক্ষেপ করে নি। কারণ তার কাছে অবশিষ্ট তিনটে পাখি আছে। যা দিয়ে সে ‘হীরক-দীপ্তি’ ছেলেবেলা তৈরি করতে পারবে। এই তিনটে পাখিকে আর আকাশ চিনিয়ে কোন লাভ নেই। কারণ, তারা মনিবকে ভালোবাসার কৌশল আয়ত্ত করে নিয়েছে, ইতিমধ্যে।
ইতিমধ্যে, আপনারা আশা করি জেনে গেছেন উপরের গল্প বা কবিতাটির রচয়িতা কবি প্রিয় সাবলীল মনির।
একেবারে সহজ ভাষায় গল্পটি শুনিয়েছেন তিনি। তবে, এর অন্তরালে রয়ে গেল, না বলা আরও কত কথা।
প্রথমেই প্রশ্ন জাগে মনে, খোলা জানালার সন্ধান তো ওরা চারজনেই পেয়েছিল। তবু একজনই কেন মুক্তির জন্যে ছটফট করতো এবং অবশেষে সে মুক্তির সন্ধানে বেরিয়েও পড়ল। বাকি তিনজনও তো পথটা দেখতে পেয়েছিল তবু, তারা রয়ে গেল। কেন? কারণ তারা সখ্যতার বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে চেয়েছিল।
সখ্যতাই জীবনের শ্রেষ্ঠ ধন। হৃদ্যতা, সমস্ত সম্পর্কের প্রথম ও শেষ কথা। একটা সম্পর্ক টিকে থাকবে কি না? তা নির্ভর করে তার মধ্যে সখ্য ভাব আছে কি না?
কবি, কবিতার নাম দিয়েছেন “মুক্তি ও ভালোবাসা”। মানুষ মুক্তি চায়। কেন? স্বাধীন হবে বলে। তবু, স্বাধীনতা আর মুক্তির মধ্যে যেন সূক্ষ্ম এক ফারাক! আদায়ের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা আসে। পরাধীনতার উল্টো পিঠেই তার অবস্থান, সবসময় । আর, মুক্তি মনজ। এর মধ্যে মানসিকভাবটারই প্রাধান্য। মন থেকে চাইলে তবেই, মুক্তি। তাই, শেষোক্ত তিনটি পাখিই আমার ছেলের বন্ধুত্বের অমোঘ টানে থেকে গেল শেষ পর্যন্ত। রয়ে গেল তারা জানালা খোলা পেয়েও...
প্রিয় কবি কোন গুঢ় দর্শনের কথা শোনাতে চান নি। তবে গল্পের ছলে সহজ সরল সাধারণ ঘটনার মাধ্যমে পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া সখ্যতার অসীম শক্তির কথা বলে দিলেন। চিনিয়ে দিলেন তিনি, পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিটাও।
এমন এক আশ্চর্যসুন্দর কবিতার নির্মাণকারী কবিকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।
ভালো থাকবেন প্রিয় কবি।
আন্তরিক শুভকামনা।