একটি শব্দের অভাবে
সহিদুল হক (দীপ্র কবি)
শূন্যের ঘরে তো কিছু থাকেনা! প্রত্যুত্তরে তাই, প্রত্যাশা থাকেনা তার। আর,অভাবের ঘর! ভরা যে কিছুটা হলেও; সর্বক্ষণ তাই, প্রত্যাশায় চেয়ে থাকে সে!
তবু...
“একটি শব্দের অভাবে অলঙ্কারহীন নারীর মতো
ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ে থাকে কোন কোন বাক্য।
যেভাবে নুনের অভাবে স্বাদহীন হয় ব্যঞ্জন,
আধছাটা ডানায় উড়তে পারেনা পাখি।”
আসরের প্রিয় কবি সহিদুল হক (দীপ্র কবি) রূপদান করেছেন একটি কাব্য কথার। নাম “একটি শব্দের অভাবে।”
কবিতার কথাগুলি কানে বেজে চলে একটানা বিষাদের অনুরণনে। সত্যিইতো, সামান্য একটু কম, কী অসামান্য, কী অজেয় শক্তিতে, অসীম শূন্যতায় হাহাকার করে ওঠে! এরচেয়ে সর্ব হারা বুঝি, ভালো আছে বোধ হয়! তার তবু, সান্ত্বনা আছে, না থাকার! আর অভাবের ঘর, থেকেও-অপ্রাপ্তির শূন্য ভাঁড়ারে...
অভাবটা যে কিসের! তার আবরণ উন্মোচন করেননি কবি, শেষ পর্যন্তও! পাঠকগণ, পাঠ করে নিজের নিজের মতো করে বসিয়ে নেবেন তাঁদের অভাববোধ-সেই শূন্যস্থানে।
আর, এইখানেই কবিতাটির আরোহণ মাটি ছাড়িয়ে আকাশসীমায়। মনের আকাশে ভালোলাগায় চক্কর কাটতে থাকে সারাক্ষণ। দেখাদেখি আকাশও নেমে আসে মাটির কাছাকাছি...
“আর আশ্চর্য হয়ে দেখি, বিশ্বাস কর, যতবার ছাদে উঠি
ঠিক ততবার, চক্কর কাটা থেমে যায় প্লেনের, নেমে আসে মেঘ চিরে, মিলিয়ে যায় দূরের বন্দরে।
লাফ দিয়ে ডানা ধরার স্বপ্নটা ভেঙে যায় বার বার।”
গল্পের ছলে, আলাপনের ভঙ্গিতে কবি একটানা বলে চললেন তাঁর সুভাষিনীকে। সঙ্গত কারণেই, এক নিদারুণ অভাব বোধেই জানা যায়নি সুভাষিত প্রত্যুত্তর।
“তবে ইথারের বদলে কিছু মেঘ নেমে আসে, সেখানে
তন্নতন্ন করে খুঁজেছি শব্দটা। মেলেনি...”
শুধু, পূর্ণ হয়ে ফুটতে চেয়েও মাঝ পথে হঠাত কেমন সব আয়োজন বৃথা হয়ে ফেরে শুধু শুধু;
“তুমি তো জানো সুভাষিনী, একটি শব্দের অভাবে
কিভাবে সংকুচিত হয় বাক্যের শরীর...”
আবেগের কলস উজাড় করে নিঃশেষ করে দিয়েছেন কবি। বড়ো সুন্দর এক অনুভবে, এক আকাশ প্রশ্নের মধ্য দিয়ে কবিতাটির ভাবনাকে ছেড়ে রেখে যান পাঠকের জন্য...
আন্তরিক অভিনন্দন জানাই প্রিয় কবিকে এমন এক মনোরম কবিতা আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য।
ভালো থাকুন কবি।
আন্তরিক শুভকামনা রইল।