বাঁকের সামনে এলে
প্রিয় কবি রণজিৎ মাইতি
নিঃস্ব বলেই তো সে আজ ফতুর! তবে ফতুর যখন, তখন তার নিশ্চয় এক অতীত ছিল! সে অতীত এক সমৃদ্ধশালীর! সে অতীত এক বিত্তবানের-সব খোয়ানোর...
আসলে, জীবনের চলন কখনও সরলরৈখিক হয় না! চলমান জীবন নিয়েই তাই, আমাদের প্রতিদিনের পথচলা। আর, এই চলন, প্রতিক্ষণে আমাদের জীবনকে নতুন নতুন মোড়ে এনে দাঁড় করিয়ে দেয়।
অনন্য লিখনশৈলিতে জীবনের এই বাঁকের কথা শোনালেন সবার প্রিয় কবি রণজিৎ মাইতি। তাঁর মনোরম এক কাব্যকথায় “বাঁকের সামনে এলে।”
বর্তমানে পৌঁছেও ভুলতে পারি না অতীত স্মৃতিকথা...স্মৃতিরোমন্থন; স্মৃতির সরণি পিছে টেনে ধরে নিয়ে যেতে চায় ফেলে আসা গোলাপ মালঞ্চে। “অথচ নিবিড় জীবন গাঁথা সম্পর্ক নির্ভর।” চাইলেই ফিরে যাওয়া যায় না, এই বাঁক থেকে অন্য বাঁকে!
সম্পর্কও জীবনের মতো। সেও থাকে না একইরকম। জীবনভর জীবনের ওঠাপড়া... কখনও ঠোকাঠুকি কখনও ভালোবাসা... কখনও বা শুধুই শোষক-শোষিতের...
পথ চলতে চলতে পায়ে গুপো পড়ে যাওয়া অভিজ্ঞেরও বাঁকের সামনে এলে ক্ষুধা বেড়ে যায়। সতত এ ক্ষুধা, অভিজ্ঞতা দিয়েও ঢাকা যায় না। আসলে, এই ক্ষুধাই, এই তৃষ্ণাই জীবনের পথ চলার একমাত্র অবলম্বন। আর, বিতৃষ্ণা এসে গেলে!
“রক্তে বিতৃষ্ণা এলে ঘরে টেকা দায়”
বড়ো অনন্য এক অনুভব। এই তৃষ্ণাই আমাদের একমাত্র চালিকাশক্তি। অনন্ত এই শক্তি জীবনের বাঁকেও জীবনকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে বলে। বলে, চলো দেখি সুমুখপানে, দেখি আর কি আছে জীবনে!
“আজ সেখানেই জমে আছে ফতুরের মেঘ
ঘন কালো, বৃষ্টির সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি”
এক আশা জাগানিয়া অনিশ্চয়তায় ইতি টানেন কবি, অনন্যসুন্দর কবিতাটিকে। বড়ো মনোরম সমাপন।
কবিতার নামকরণ, বিষয়, এবং বিষয়টিকে বলা অত্যন্ত সুচারুরূপে সেরেছেন প্রিয় কবি- সেটা বলাই বাহুল্য।
সব দিক থেকে সমৃদ্ধ এক আধুনিক কবিতাকে আসরে উপহার দেওয়ার জন্য প্রিয় কবিকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।
ভালো থাকুন কবি।
আন্তরিক শুভকামনা রইল।