আমি হতে চাই বাতাসের মতো,
নদীর কলকল ধ্বনির মতো,
অবারিত আকাশের মেঘের মতো,
যে কেবল আপন গতিতে ছুটে চলে,
যাকে কেউ থামায় না,
কেউ বাঁধে না,
যার বয়স, জাত, লিঙ্গের নেই পরিচয়,
যার চলার পথে নেই কোনো শৃঙ্খল।

আমি হতে চাই অগ্নিশিখা,
যে নিজ আলোয় পথ চিনে নেয়,
যে শুধু আলো বিলায়,
নিজেকে পোড়ানোর দুঃখে কাতর হয় না।

আমি হতে চাই সমুদ্রের ঢেউ,
যে আসবে, ভাঙবে, ফিরবে—
তবু ক্লান্ত হবে না কখনো,
তার চলায় বিধান লিখবে না কেউ!

আমি হতে চাই সেই নামহীন শক্তি,
যে নিজের নিয়মে বাঁচবে,
নারী বলে কেন নিয়ম ভিন্ন?"
যে জবাব খুঁজবে না, নিজেই হবে উত্তর!

আমি হতে চাই আকাশের রঙ,
যে প্রতিদিন নতুন সাজে সেজে উঠবে
যে কখনো নীল, কখনো লালচে আভা,
তবু কখনো নিজের অস্তিত্ব হারাবে না।

আমি হতে চাই বিদ্রোহের গান,
যে কণ্ঠরোধ করা যায় না,
যে হৃদয়ে আগুন জ্বালায়,
যে শিকল ভেঙে পথ বানায়।

আমি হতে চাই পূর্ণিমার চাঁদ,
যে নিঃসঙ্গ থেকেও আলো বিলায়,
যে হাজারো আঁধার পেরিয়ে
নিজেকে হারাতে শেখেনি।

আমি হতে চাই গাছের শেকড়,
যে গভীরে গিয়ে শক্ত হয়,
যাকে টেনে তুলতে গেলে
পৃথিবীও কেঁপে ওঠে।

আমি হতে চাই সেই অনন্ত শক্তি,
যে ভেঙে গড়তে জানে,
যে কাঁদতে জানে, হাসতেও জানে,
যে ভালোবাসে, যে শাসন মানতে বাধ্য না।

আমি হতে চাই মুক্ত পাখির ডানা,
যে ইচ্ছে হলেই উড়তে পারে,
যে গন্তব্য নিজেই ঠিক করে,
যাকে আটকে রাখার সাধ্য নেই কারও।

আমি হতে চাই আমি!
কোনো নিয়মের বেড়াজালে নয়,
কোনো শর্তে বাঁধা নয়,
আমি হতে চাই আমার ইচ্ছে, আমার স্বপ্ন,
আমি হতে চাই আমি!

কেন নারীর বেলায় অন্য নিয়ম?
কেন তার স্বপ্নে আঁকা হয় সীমানা?
কেন তার পথ বাঁধা সমাজের শিকলে?
কেন তার ইচ্ছে বিচার হয় চোখের ইশারায়?
কেন তাকে থামিয়ে বলা হয়— "এটা তোমার জন্য নয়!"