ফিরে আসবে কি তারা,
কোন এক শুভ সকালের আলোয়,
প্রিয় শীতের বিকেলে, নরম রোদের পালকে ঢেকে?
ক্যালেন্ডারের পাতারা ঝরে যায় একে একে,
অন্তিম দিন ফুরিয়ে যায়—ফিরে আসে না কেউ।

জীবনের পথ থেমে যায় কখনো আকস্মিক,
কারো আগে, কারো পরে—থামাটাই নিয়তি।
দীর্ঘশ্বাস হয়ে ভাসে এক অনন্ত ব্যথা,
ভাইটা দেখে যেতে পারলো না তার স্বপ্নের ছোঁয়া।

তার সন্তানের কচি হাত ধরে হাঁটার যে আশা ছিল,
জুম্মার নামাজের যে পবিত্র প্রতিশ্রুতি,
সেই স্বপ্ন কি বাতাসে মিশে গেলো?
নাকি থেকে গেলো হৃদয়ের গভীরে চাপা?

বাবার মুখ এখনো জীবন্ত মনে হয়,
যেন গেলেন কোথাও, ফিরবেন শিগগিরই।
আলনায় বাবার পাঞ্জাবি,
ডাইনিং টেবিলে রাখা বোনের বানানো আচার,
আলমারিতে ভাইয়ের ঈদের নতুন জামা—
সব একই রকম, শুধু মানুষগুলো কোথায়?

মাঝেমাঝে মনে হয়, কলিংবেল বাজলেই
ভাই দাঁড়িয়ে আছে দরজার ওপারে,
বাবা লাঠি হাতে ধীরে ধীরে ফিরছেন মসজিদ থেকে।
রাস্তাগুলো তো ঠিক আগের মতোই আছে,
কোথায় তারা
শুধু বাতাসে ভাসে বাবার গায়ের চিরচেনা গন্ধ।

হৃদয়ের কোণে জমে থাকা কথারা
মিশে যায় সময়ের মতো,
আমার বৃদ্ধাঙ্গুলি বাবার মতো, ভাইয়ের মতো,
তারা তো মাটিতে মিশে গেছে
একদিন আমিও মিলিয়ে যাবো।

এই জীবন, এই শ্বাস-প্রশ্বাস এত অনিশ্চিত,
তবু স্মৃতির আলোর রেশে জ্বলে থাকে তারা,
ফিরে না এলেও, থেকে যায় মনে—
অক্ষয়, অবিনশ্বর, চিরন্তন।