ভুলি নাই, ভুলি নাই প্রিয়তমে
সে কিগো ভোলা যায় এ জনমে?
এ কেমন অদৃশ্য মায়ায়
বেঁধেছো আজি শুধু যে আমায়!
এখন আমি যেখানেই যাই
তব মায়া যে আমারে কাঁদায়।
বোঝাবো আমি কেমনে তোমায়
কি যে দহন তব বিরহ ব্যাথায়।

এ যেন মোর অন্তরের অনন্ত মায়া
এ যেন মোর স্নায়ুতে লালিত কায়া
এ যেন মোর সকল আশার-ভাষা
এ নহে যে কখনো ক্ষণিকের।
নহে এ ক্ষুদ্র, নহে এ তুচ্ছ
ইহা নহে তো কভূ অতীতের।

কি আছে তব নয়ন আভায়
আপন করেছে শুধু যে তোমায়
সহস্র মানুষের এই বিশ্ব-সভায়;
উদিত সে পবিত্র মায়ার আভায়
উদ্ভাসিত হয়েছে মম জীবন
চীর অম্লান আলোক-ধারায়।

ভুলি নাই, ভুলি নাই প্রিয়তমে
সে কিগো ভোলা যায় এ জনমে?
প্রথম সে প্রভাতের অরুণ-আলো
কমল পলক মাঝে তব নয়নের কালো
কেমনে বোঝায় তোমায় লেগেছিলো-
মোর কত যে ভালো।

যখন উদিলে তুমি মম জীবনে
অমৃত-সুধা বিতরিয়া সে মহালগনে,
মায়ামৃগ কম্পমান সে অনুক্ষণে
বেঁধেছিলে মোরে তুমি শত অনুরাগে।
কভু ভাবি নাই তাহা
শুধু আমারই আবেগ পুঁঞ্জীভূত;
তার তিল মাত্র তুমি
কখনও বোঝ নাই?
এ চরম অবিশ্বাস্য মিথ্যে!

বুঝিয়াছ ওগো বিজয়ীনী
জানি তাহা আমি
নিজমনে আপনাই আপনি।
উজ্জ্বল হইয়া থাক তুমি
বিজয়ের আপন গরীমায়।
আছ তুমি মোর মনের কমল কাননে
হয়ে চীর প্রিয়তমা
হয়ে মোর জীবন-সঙ্গিনী
ভেবোনা কভু নিজেরে একাকীনী।

কখনও কোন অবসাদে, কভু আনমনে
রবে তুমি অনন্তকাল এ মনের অঙ্গনে।
ভুলি নাই, ভুলি নাই প্রিয়তমে
সে কিগো ভোলা যাই এ জনমে?
যদিও তুমি পাশে নাই
আছো বহু দূর লোকালয়
তাই বুঝি মোর এই হিয়ায়
বাজে বীণ তব বিরহ-ব্যাথায়।

যে বলে বলুক আমায়
হেথা মোর কেহ নাই
তাতে মোর ভয় নাই
আজি শুধু নিজেরে বোঝাই
হয়তো স্বশরীরী পাশে নাই
আছো অশরীরী সব ঠাঁই;
আছো চীর জাগ্রত আমার এ হিয়ায়
সত্তা হয়ে মিশে আছো আমার এ আত্মায়।

××××××××××××××××××××××××××

রচনাকাল ও স্থান: ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪০৫ বঙ্গাব্দ,
১১ নভেম্বর, ১৯৯৮ ইং, সাহাপুর, ঈশ্বরদী, পাবনা।