আজ রাতে, শরতের চাঁদ আধখানা আলো মেখে আকাশের কোণে
তোমার কিরণ দেয়।  তুমি নেই তাতে? শুধু বিশুদ্ধ কিরণ?
আলো জ্বেলে চোখ তুলে বলো আমাকে:
"কত রাত বেঁচে রবে নিভৃতে নীরবে?"
আমি শুধু কাগজে কলমে
দেখি শুধু, অনুভব করি শুধু তোমাকে বিরলে।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় মরা নদী স্রোতে;
একখানা ডিঙি বেয়ে তোমার অপর পাড়ে ভেসে উঠি;
তারপর তোমার দু'হাতে হাত রেখে-
দূর আকাশের চাঁদে ঠোঁট ছুঁয়ে তোমার যুগল ঠোঁটে নিরুত্তাপ
ঠোঁট রেখে বলি: "ভালোবাস?"
তোমার উত্তর যেন গুপ্ত কোনো রহস্যের দ্বীপ থেকে
সমুদ্রের ঢেউ বয়ে আনে - শান্তি! শান্তি! শুধু আহ্!

তুমি ফের ক্রমে ক্রমে নিরুত্তাপ আলো জ্বেলে নিভে যাও;
হৃদয়ের গভীরে তুমি ডুবে যাও ছলেবলে;
যাওয়ার খানিক আগে একটু হেঁসো?
যতটা সে চাঁদ হাসে দূর হতে বায়ু বয়ে আনে তার স্নিগ্ধ সুবাস;

আমার বাগানে ঢের আগাছার মতো বেয়ে উঠে সহস্র মানবী
সহস্র বনানী ফেলে ওরা এত দূর এসে কী চায় আমাতে!
তবুও ফিরিনি আমি তাদের হৃদয়ে;
এঁকেবেঁকে নদী পথে সমুদ্র সুগন্ধে;
লোনা জলে স্পর্শ রেখে তোমার দ্বীপের পাড়ে
ঢেউ হয়ে আঁচড়ে পড়েছি।
তুমি তাতে রেখেছো কি তোমার হৃদয়?
লোনা জলে চেখেছো কি ব্যথা নিরাময় হয়?
আজ রাতে, শরতের চাঁদ আধখানা আলো জ্বেলে আমার জানালায়,
চুপচাপ চেয়ে থাকে গুপ্ত কোনো রহস্যের অর্থ খুঁজে ফেরে।
আজো তার বোধোদয় হয়নি কো।
আজো সে যে একই আঁচে ডেকেছে আমাকে;
আমি তার শরীরের গন্ধ শুঁকে বুঝেছি সেখানে- তুমি নয়
তোমার শরীর!
তারপর মরা নদী স্রোতে, ডিঙি বেয়ে তোমার অপর পাড়ে ভেসে উঠি
তোমার কাঁপা দু'হাতে নিজেকে দিয়েছি সঁপে
তুমি তবু নিরুত্তর ছুঁয়ে গেলে আমার শরীর?
কানে মুখ গুঁজে আমি বলেছি তোমাকে:
"ভালোবাস?"
তুমি স্মৃত হেঁসে শুধু দু'চোখ আড়াল করে ফিরেছো সমুদ্রে;
তোমার উত্তর তবে সমুদ্রের ঢেউ বয়ে আনেনি এখনো?
গুপ্ত কোনো রহস্যের দ্বীপ আমি খুঁজে পাইনি কো!

তবে এই রহস্যের জট বুঝি চাঁদ-নদী সমুদ্রের ঢেউ আর রহস্যের দ্বীপে;
চিরতরে দোল খাবে?
আর কত গাঢ় রাতে তোমার নিকটে গেলে নিরুত্তর মুখ থেকে
'ভালোবাস' এ কথাটি লোনাজল মেখে;
হৃদয়ের প্রবাল প্রাচীরে এসে করাঘাত দেবে?
আর কত গাঢ় রাতে গেলে?