আমি জন্মেছি ভিন্ন প্রজাতির মানুষ হয়ে,
তা হয়তো তুমি জানো প্রিয়তমা, জানো কি?
এই উন্নত সমাজব্যবস্থায় আমার কোন লোভ নেই, কিছুই যে আমার নয়!
আমি পরবাসী পরগাছা হতে নিজের হৃদয়কে পোষ মানাতে পারিনি।
আমি আকাশের দিকে তাকাতে জানি বলেই নতজানু হতে শিখিনি,
আমি মাটিকে স্পর্শ করে বেঁচে থাকি বলেই কিছুটা গর্ব আমারও আছে!
আমি যে একবিংশ শতাব্দীর অযোগ্য তা মেনে নিয়েছি, শতাব্দীকে
আমার অযোগ্য বলছি না কারণ, এরা মেনে নেবেনা; আমাকেই বদলে দেবে।
সমস্ত প্রতিকূলতাকে অগ্রাহ্য করেই আমি তোমাকে ভালবাসি।
মেনে নেবে?
তোমার সব কথা আমার মনে আছে, তুমি বলেছিলে -
"যে কাছের মানুষদের ভাল রাখতে পারেনা, সে পারেনা কিছুই!"
আমি যে তেমনটি বলেছি তা তো নয়! আমি তোমাদের ভালবাসি,
আমি তোমাকে ভালবাসি প্রিয়্তমা।
তারপরও নেমে যেতে পারি রাস্তায়, তুমি অধিষ্ঠ হতে পার সেরাকে নিয়ে,
আমি সেরা নই। আমি ভিন্ন প্রজাতির, যারা উন্মাদ বলে বিশেষায়িত হয়।
এই উন্মাদদের দানের পৃথিবী নিয়েই যারা বাস্তববাদের দর্শন বিবৃত করে,
তাঁদের সুশৃঙ্খল জীবনের প্রতি বিন্দুমাত্র লোভও আমার নেই।
তারপরও আমি তোমাকেই ভালবাসি প্রিয়্তমা।
আমি ভালবাসি আন্দোলনরত ছাত্রনেতাকেও, আমি ভালবাসি
হিংসুকের রক্তাক্ত বক্ষ, প্রতাপ দেখে কাতর হতে আমি শিখিনি;
আমি রাজনীতি ভালবাসি, ভালবাসি বাংলাদেশ, গ্রাম, শহর, মফোস্সল,
পরিবার, সংসার; আমি ভালবাসি তোমাকে প্রিয়তমা।
ভালবাসি পুর্ণিমার চাঁদ, বৃষ্টির শব্দ, ভেজা মাটির গন্ধ, তোমার খোলা চুল,
ভালবাসি বোনের চোখে ভ্রাতাকে কাছ থেকে দেখার আকাংঙ্খা, মা-বাবা,
ভালবাসি মঞ্চ, ৭-ই মার্চের ভাষণ থেকে বন্ধুদের আড্ডায় বিকেলের ঘাম,
নীলপাহাড়ের ডাক শুনে ভাবনায় হারাতে চাই তোমার চোখে,
ঝর্ণাভেজা তোমাকে জড়িয়ে ধরার আজন্ম ইচ্ছাকে দমাতে পারেনি কোন সংকল্পই!
তারপরও বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে বাড়ির ছাদে লাল-সবুজে পতাকা ওড়াতে আমি ভুলে যাব না; ভুলে যাব না আমি শ্লোগানের উচ্চারণ।
ভুলে যাব না আমি তোমাদের ভালবাসতে, ভুলে যাব না আমি,
প্রিয়তমা, তোমাকে দেয়া কথা, আমি তোমাকেই ভালবাসি।
একবিংশ শতাব্দিকে সাক্ষী রেখে তুমি বাস্তববাদের সাক্ষ্য দিওনা।
ঐ সবকিছুর শপথ নিয়ে, নীল পাহাড় সাক্ষী, সাক্ষী আজানের সুর,
বিদ্রোহের আগুন থেকে সকল উত্তাপ শুষে নিয়ে আমি বলছি;
তোমার চোখে চোখ রেখে বলছি প্রিয়তমা,
আমি তোমাকে ভালবাসি।